‘ঘরের মাঠে’ বজ্রপাত ঘটাতে চায় সিলেট

আশা আসলে শেষ। তবে আছে শেষটায় ভালো কিছু করার তাড়না। সেই তাড়নায় ‘ঘরের মাঠে’ বজ্রপাত ঘটাতে চায় তারা।

‘তারা’ বলতে সিলেট থান্ডার। নামের মধ্যে ‘বজ্রপাত’ (থান্ডার) শব্দ থাকলেও বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) এখনও পর্যন্ত সেই ভূমিকায় দেখা যায়নি তাদেরকে।

আজ বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে বঙ্গবন্ধু বিপিএলের সিলেট পর্ব। নামের সাথে ‘সিলেট’ যুক্ত থাকায় সিলেট থান্ডারের ঘরের মাঠ সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম। তবে দলের সাথে সিলেটের সম্পৃক্ততা শুধু ওই নামেই সীমাবদ্ধ।

বিপিএলের এবারের আসরে সিলেট থান্ডারের অবস্থা শোচনীয়। সাত দলের আসরে পয়েন্ট তালিকার একেবারে নিচের স্থানটি সিলেটের। ৮ ম্যাচ খেলে এক জয়ের বিপরীতে সাত হার, পয়েন্ট মাত্র ২। রানরেটেও তলানিতে সিলেট (-০.৬৭৮)।

এরকম অবস্থায় প্লে-অফে খেলার সুযোগ আর নেই সিলেট থান্ডারের। বাকি আছে চারটি ম্যাচ। তন্মধ্যে তিনটিই সিলেটের মাঠে। এসব ম্যাচে ভালো কিছু করার তাড়নায় আছে সিলেট থান্ডার।

বুধবার যেমনটি বলছিলেন থান্ডারের কোচ দক্ষিণ আফ্রিকান গ্রেট হার্শেল গিবস, ‘আমরা এখন আর প্লে অফে খেলতে পারব না। কিন্ত নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ ঠিকই আছে। আমি গতকাল (মঙ্গলবার) রাতে ওদেরকে বলেছি, নতুন বছর এসেছে। শারীরিক, মানসিক ও টেকনিক্যাল, খেলার সব দিকে উন্নতি করতে হবে একজন ক্রিকেটার হিসেবে। সামনে তাকিয়ে এটিই দলের কাছে আমার প্রথম চাওয়া।’

তবে করুণ অবস্থায় থাকা দলকে উজ্জীবিত করাটাও কঠিন। অবশ্য হার্শেল গিবস বলছেন অন্য কথা, ‘আমি বলব না কাজটা কঠিন। তবে কঠিন হোক বা না হোক, এই পরিস্থিতিতে থাকাটা আসলে খুব ভালো কিছু নয়। আমরা সবাই এই অবস্থার মধ্য দিয়ে গিয়েছি আগেও। দিনশেষে সবাইকে গভীরভাবে ভাবতে হবে যে আমরা একটি ফ্র্যাঞ্চাইজিকে, একটি ব্র্যান্ডকে এই লিগে প্রতিনিধিত্ব করছি। পারফরম্যান্সে তাই গর্ব খুঁজে নিতে হবে। সেই সুযোগ মিলিয়ে যাচ্ছে না। পরের চার ম্যাচে সবার সামনেই সুযোগ থাকছে নায়ক হওয়ার। ঘুরে দাঁড়ানোর।’

সিলেট থান্ডারের সেই ‘নায়ক’ কে হবেন? জাতীয় দলের অলরাউন্ডার মোসাদ্দেক হোসেন, ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ মিঠুন, পেসার ইবাদত হোসেন আছেন। বিদেশি আন্দ্রে ফ্লেচার, জনসন চার্লস, নাভিন-উল-হক, রাদারফোর্ডরা আছেন। যে কারো ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়ার সক্ষমতা আছে। প্রয়োজন সেই সক্ষমতাকে মাঠে প্রয়োগ করা, ম্যাচের পরিস্থিতি বুঝে খেলা।

সেই তাগিদই দিচ্ছেন সিলেট থান্ডারের কোচ হার্শেল গিবস, ‘আমাদের ছেলেরা সবাই ভালো। ব্যাটে-বলে সবাই প্রতিভাবান। কিন্ত যেটি বললাম, মাঠে খেলাটা বুঝতে পারার ক্ষমতায় আমাদের এই স্কোয়াড পিছিয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি বুঝে মাঠে আরও ভালো সিদ্ধান্ত নেওয়া, এই ব্যাপারগুলোতে ঘাটতি থেকে গেছে। এজন্যই আমরা ভুগেছি।’

দলের স্কোয়াড নিয়েও হার্শেল গিবসের কিছুটা আক্ষেপই যেন আছে। গিবস বলছিলেন, ‘দূর্ভাগ্যজনকভাবে, ড্রাফটের সময় আমি ছিলাম না। আমাকে একটি স্কোয়াড ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি যদি ড্রাফটের সময় থাকতাম, অবশ্যই ভালো দুয়েকজন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান দলে নিতাম। বাঁহাতি পেসার নিতাম। তাতে বৈচিত্র থাকত। কিন্তু আমাকে এই স্কোয়াডই দেওয়া হয়েছে।’

‘কোচ হিসেবে আমি খুঁজবো, কিভাবে আমরা প্রতিপক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারি। আমরা যখন মাঠে নেমেছি, প্রতিপক্ষ দেখেছে যে আমাদের কেবল একজন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। প্রতিপক্ষের বোলারদের জন্য তাই আমাদের ব্যাটসম্যানদের চাপে রাখা সহজ হয়েছে, কারণ আমাদের প্রায় সবাই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। স্কোয়াডে মাত্র একজন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান, এমন স্কোয়াড আর কোথাও সম্ভবত দেখতে পাবেন না। প্রথম ছয় ব্যাটসম্যানের মধ্যে অন্তত দুজন বাঁহাতি থাকবে, এটিই ন্যূনতম স্ট্যান্ডার্ড হওয়া উচিত। যাতে প্রতিপক্ষের বোলারদের চাপে রাখা যায়। আমার সেই সুযোগ ছিল না। কাজটি তাই কঠিন ছিল।’-যোগ করেন গিবস।

এশিয়াবিডি/ডেস্ক/সাইফ

আরও সংবাদ