অসময়ে বৃষ্টি, ওদের মুখে হাসি

একদিকে শীত। অন্যদিকে নতুন বছর। দিনভর থেমে থেমে কখনো গুঁড়ি গুঁড়ি, আবার মাঝারি বৃষ্টিতে জনজীবনে স্থবিরতা নেমে এসেছে। সাধারণত জানুয়ারির দিকে এ বৃষ্টিপাত হওয়ার কথা নয়। তারপরও অসময়ের বৃষ্টিতে চা গাছের জন্য রয়েছে উপকারিতা। ফলে গাছের নতুন কুঁড়ি দ্রুত ছাড়তে সাহায্য করবে।
গতকাল শুক্রবার চায়ের রাজধানী মৌলভীবাজার জেলায় দিনব্যাপী বৃষ্টিপাত হয়েছে। গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির সঙ্গে নেমে এসেছিল কনকনে ঠাণ্ডা। এ ঠাণ্ডার প্রভাব কয়েকদিন থাকবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
শ্রীমঙ্গলস্থ আবহাওয়া অফিসে ইনচার্জ মো. আনিসুর রহমান বলেন, শুক্রবার ভোর ৫টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৯ মিলিমিটার। শুক্রবারে তাপমাত্রা ছিল সর্বনিম্ন ১৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্বোচ্চ ২০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
অনাকাঙ্ক্ষিত এ বৃষ্টির ফলে চা গছের উপকারী সম্পর্কে হামিদিয়া চা বাগানের জিএম গবেষক সিরাজুল ইসরাম বলেন, যারা এখন চা ছাটাই করছেন তাদের জন্য এ বৃষ্টিপাত উপকারি। কারণ কৃত্রিমভাবে চা গাছে পানি দিতে হতো। কিন্তু এখন সৃষ্ট্রিকর্তা আশীর্বাদ হিসেবে চা গাছে এটা সরবারাহ করলেন। তাছাড়া সিড নার্সারি বা ভিপি নার্সারির অঙ্গজ বংশ বৃদ্ধি চারার জন্য এ বৃষ্টিপাত বেশি লাভ হবে। এমন বৃষ্টিপাতের ফলেই চায়ের উৎপাদন চলতি বছর চায়ের ইতিহাসে সর্বকালের সেরা রেকর্ড সংখ্যায় পৌঁছে গেছে।
তিনি জানান, এবার ডিসেম্বর পর্যন্ত চায়ের উৎপাদন গিয়ে দাঁড়াবে প্রায় ৯৫ মিলিয়ন কেজির ওপরে। অর্থাৎ ৯ কোটি ৫০ লাখ কেজি ছাড়িয়ে যাবে।
বৃষ্টিপাত সম্পর্কে বাংলাদেশিয় চা সংসদের সিনিয়র টি-প্লান্টার ইবাদুল হক জানান, খুব ভালো বৃষ্টিপাত হয়েছে। এটা চায়ের জন্য বেশ উপকারী। সাধারণত এ মাসে বৃষ্টিপাত হয় না। চা গাছগুলোর গোড়ার মাটি এ বৃষ্টির পানি প্রায় এক মাস পর্যন্ত ধরে রাখবে। যা নতুন কুঁড়ি ছাড়তে সাহায্য করবে।
ফেব্রুয়ারি মাসেই প্রুনিং বা ছাটাই করা চা গাছে নতুন কুঁড়ি আসতে শুরু করবে। তাড়াতাড়ি ক্রপ বা উৎপাদন আসবে। বৃষ্টির পানিতে নাইট্রোজেন থাকে, যা আমাদের কৃত্রিম ইরিগেশন চা গাছগুলোতে পাইপের মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে পানি দেওয়া থেকে অনেক উপকারী বলে মনে করছেন চা সংশ্লিষ্টরা।
এশিয়াবিডি/ডেস্ক/সাইফ