শিরোপা তুমি কার
বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের সপ্তম আসরের ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে খুলনা টাইগার্স এবং রাজশাহী রয়্যালস। প্রথমবারের মতো ফাইনালে মুখোমুখি হবে দল দুটি। সে সঙ্গে এবার নতুন কোনো চ্যাম্পিয়ন পাবে বিপিএল। আগের ছয় আসরের মধ্যে ঢাকা তিনবার, কুমিল্লা দুইবার ও রংপুর একবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা ৭টায় মাঠে গড়াবে ম্যাচটি। মাছরাঙা ও গাজী টিভিতে সরাসরি দেখা যাবে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ। এছাড়াও র্যাবিটহোলের ইউটিউব চ্যানেল, ওয়েবসাইট, অ্যাপসসহ পেজে দেখা যাবে সরাসরি।
ফাইনালের আগে তিনবার মুখোমুখি হয় খুলনা ও রাজশাহী। টুর্নামেন্টের নবম ম্যাচে হয় দুই দলের প্রথম সাক্ষাৎ। যেখানে রাজশাহীকে ৫ উইকেটে হারায় খুলনা। আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৮৯ রান করে রয়্যালস। এ দিন ৮৭ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলে রাজশাহীর পাকিস্তানি অলরাউন্ডার শোয়েব মালিক। ৫০ বলে ৮ চার ৪ ছক্কায় সাজান ইনিংসটি। এছাড়া ৪০ রানে অপরাজিত থাকেন ইংলিশ অলরাউন্ডার বোপারা।
চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো না হলেও খুলনার অধিনায়ক মুশফিকের ব্যাটিং তাণ্ডবে শেষ পর্যন্ত জয় নিশ্চিত হয় তাদের। ৯৬ রানের ইনিংস খেলেন মুশি। সাজ ঘরে ফেরার পূর্বে ৫১ বলে খেলেন ৯ চার ৪ ছক্কার ইনিংস। এছাড়াও রুশোর ব্যাট থেকে আসে ৪২ রান। ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হন খুলনার কাপ্তান মুশফিক।
তবে দ্বিতীয়বারের সাক্ষাতে ভালোভাবেই প্রতিশোধ নেয় রাজশাহী রয়্যালস। রাজশাহীর অধিনায়ক আন্দ্রে রাসেলের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ৭ উইকেটে জয় পায় তারা। ১৮তম ম্যাচে নির্ধারিত ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৪৫ রান তোলে খুলনা। এ দিন সামসুর রহমান ছাড়া আর কেউ দলকে বড় স্কোর উপহার দিতে পারেনি। অবশ্য রুশো ও ফ্রাইলিংক খেলেন ত্রিশোর্ধ্ব ইনিংস।
সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দুই ওপেনারের দুর্দান্ত শুরুতে জয়ের পথ সহজ হয়ে যায় রাজশাহীর। ৫৮ রানের ইনিংস খেলেন ওপেনার লিটন। এছাড়াও আফিফের ২২ ও রাসেলের ২৮ রানে জয় নিশ্চিত হয় রয়্যালসদের। বল হাতে ৪ উইকেট শিকার করায় ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হন রাসেল।
দুই দলই প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে থেকে নিশ্চিত করে প্লে-অফ। প্রথম কোয়ালিয়াফার ম্যাচে অবশ্য আমিরের বোলিং তাণ্ডবে ২৭ রানের জয় পায় খুলনা। আগে ব্যাট করা খুলনা টাইগার্স এ দিন খুব বড় স্কোর করতে পারেনি। নির্ধারিত ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করে ১৫৮। ওপেনার শান্ত খেলেন ৭৮ রানের ইনিস। এছাড়া সামসুর ৩২ ও মুশফিক করেন ২১ রান।
১৫৯ রানের লক্ষ্যটা রাজশাহীর জন্য সহজই ছিল। তবে পাকিস্তানি তারকা পেসার আমিরের বিধ্বংসী বোলিংয়ে কাজটি কঠিন থেকে কঠিনতম হয়ে উঠে। কোয়ালিফায়ার ম্যাচটিতে রাজশাহীর হয়ে ব্যাটিংয়ে আধিপত্য দেখান শোয়েব মালিক। তিনি একা লড়ে যান জয়ের দিকে। খেলেন ৫০ বলে ৪ ছক্কা ও ১০ চারে ৮০ রানের ইনিংস। যদিও অন্য ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় জয় নিশ্চিত করতে পারেনি তারা।
খুলনার পক্ষে বল হাতে তাণ্ডব চালানো আমির ৪ ওভারে মাত্র ১৭ রান খরচায় শিকার করেন ৬ উইকেট। যা চলমান বিপিএলে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ উইকেট এবং আমিরেরও টি-টুয়েন্টি ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ। বিধ্বংসী বোলিংয়ের জন্য ম্যাচ সেরাও নির্বাচিত হন আমির।
দুই দলের সমীকরণে খুলনা এগিয়ে থাকলেও পিছিয়ে নেই রাজশাহী। ব্যাটিং-বোলিং উভয় ক্ষেত্রে দুর্দান্ত তারা। যার প্রমাণ দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে দলটির অধিনায়ক রাসেলের ব্যাটিং তাণ্ডব। তার ব্যাটে চড়েই চট্টগ্রামকে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে রাজশাহী।
এবার দেখার অপেক্ষা প্রথমবারের মতো কে হচ্ছে বিপিএলের চ্যাম্পিয়ন। কে পাচ্ছে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা।
এশিয়াবিডি/ডেস্ক/সাইফ