ঠিক সময়ে চালু হচ্ছে না ডিজিটাল ক্লাসরুম

দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৩১ হাজার ৩৪০টি ডিজিটাল ক্লাসরুম চালু করতে ২০১৬ সালে ‘আইসিটি ফেজ-২’ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। প্রকল্প পরিচালক নিয়োগের পর ২০১৭ সালে প্রকল্পটি যাত্রা শুরু করে। এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী জুনে। তবে এখন পর্যন্ত একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম চালু করা সম্ভব হয়নি। আগের কেনা কিছু মডেম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন জানানো হলেও এখন পর্যন্ন্ত ল্যাপটপ ও প্রজেক্টর কেনাই সম্ভব হয়নি।

তবে প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ড. আব্দুস সবুর খান বলেছেন, ‘প্রকল্প রিভিশন ও মেয়াদ দুই বছর বাড়াতে প্রস্তাব করা হয়েছে। এটি চূড়ান্ত হলে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম চালু করা সম্ভব হবে।’

প্রকল্পের অবস্থা

প্রকল্পের তথ্য অনুযায়ী, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ৩১ হাজার ৩৪০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল ক্লাসরুম তৈরি ও চালুর কথা ছিল। এছাড়াও প্রতিটি উপজেলা শিক্ষা অফিসে একটি, জেলা শিক্ষা অফিসে একটি, আঞ্চলিক পর্যায়ে ৯টি এবং মাউশিতে দুটিসহ মোট ৫৬৭টি মাল্টিমিডিয়া কনফারেন্স রুম তৈরির প্রস্তাবনা রয়েছে প্রকল্পে। সব মিলিয়ে ৪৭ হাজার ১২টি মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম ও কনফারেন্স রুম তৈরি ও চালুর কথা প্রস্তাবনা বলা ছিল। পরবর্তীতে প্রকল্পের আওতায় শিক্ষক প্রশিক্ষণের জন্য ৯৬ কোটি টাকা ব্যয় করা হলেও অর্থ তসরুফের ঘটনায় একাধিক তদন্ত চলে প্রকল্পটিকে ঘিরে। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পের ৭ শতাংশ অর্থ খরচ দেখানে হলেও মাউশির তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রকল্পের অগ্রগতি মাত্র ২ শতাংশ।

মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম চালুর বিষয়ে প্রকল্পের সর্বশেষ তথ্য নিয়ে জানা গেছে, গত ২০ ফেব্রুয়ারি প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ড. আব্দুস সবুর খান মাউশির পরিচালককে অগ্রগতি জানিয়েছেন। অগ্রগতির ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইতোমধ্যে ১৩ হাজার ৫৭৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একটি করে মডেম সরবরাহ করা হয়েছে। আর চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, সিলেট ও কুমিল্লা শিক্ষা অঞ্চলে মার্চ ও এপ্রিল মাসে ৯ হাজার ৮৫৬টি মডেম পাঠানো হবে।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের শুরুতে কেনা ১৩ হাজার ৫৭৪টি মডেম সরবরাহ করা হয়েছে। নতুন প্রকল্প পরিচালকের সময় কোনও মডেম কেনা হয়নি। ল্যাপটপ ও প্রজেক্টর কেনার বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘প্রকল্পের শুরুতে ল্যাপটপ ও প্রজেক্টর কেনাকাটায় ঠিকাদাররা রফা করতে না পারায় পিডির বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন। অভিযোগ তদন্তের আগেই ওই পিডিকে সরিয়ে নতুন পিডি নিয়োগ দেওয়া হয়। দ্বিতীয় দফায় পিডি নিয়োগের পর কোনও কিছুই কেনা সম্ভব হয়নি। তবে শিক্ষক প্রশিক্ষণের নামে ৯৬ কোটি টাকার বেশি খরচ করা হয়েছে। অর্থ ব্যয়ে নিয়ম মানা হয়নি। অর্থ তছরুপের তদন্তে প্রতিবেদন পাশ কাটাতে নতুন করে তদন্ত করা হচ্ছে।’

এশিয়াবিডি/ডেস্ক/সাইফ

আরও সংবাদ