কবিতাঃ ‘পরিণীতা’

পরিণীতা

তনিমা ইসলাম তন্নি

আমার এলোমেলো অগোছালো পরিণীতা।
যার পছন্দ ছিলো বেনারসি শাড়ি, কাঁচের চুড়ি আর চোখের নিচে লেপটে দেওয়া কাজল।
সে সব কিছু আমার সাধ্যের মধ্যে অবশিষ্ট ছিলো।
কিন্তু না,
আমার হাত গড়িয়ে তোমার চাওয়ার হিসেব শেষ অবধি আমার গন্ডি পেরোলো।
আজ তোমারই আশ্বাসে তোমার শেষ পরিনত
হলো
একটা সবুজের উপর সোনালি কাজ করা কৌটোতে রক্তের রং এ রাঙানো সিদুর।
যা সেই দিন তোমার সিঁথী বেয়ে পোঁছেছিলো কপাল অবধী,
অথচ,সে কপালে আমি লিখেই নিয়েছিলাম,
আমার সুখের ঠিকানা।
তোমার ভালোবাসার স্পর্শে,
আমি হেসেছিলাম সেদিন বড্ড বেশি,
ভেসেছিলাম নীল ধরিয়ায়,
সেদিন এর সে সুখ আমায় দিয়ে ছিলো নিদারুণ
নিদ্রায়ন,
আমি স্বপনে নিয়ে ছিলাম তোমায়,
নিশ্চুপ পাহারের চূড়ান্ত চূড়ায়।
তোমার আয়োজনের ডাকের শব্দে জাগ্রত হই সেদিন,
বিশ্বাস করো,
ঘুমকে আজো কাছে পাইনি,
একা একাই কাটে আমার প্রতিটি প্রহর,
পথিক বেশে ঘুরি আজও প্রতিটি শহর।
বিনিসুতোর মালায় আমরা আবদ্ধ ছিলাম যে বন্ধনে,
তা এক নিমিষেই গড়িয়ে গেছে
উঠোনজারা দুলোয়।
রক্তজবা ফুলে সেদিন বড্ড মানিয়েছিলো তোমায়।
গা বড়তি ছিলো ঝকমকানি সোনার গয়না।
পরিণীতা…..
তোমারি কথা রাখতে সাত সমুদ্র
তেরো নদী পার হয়ে,
কাটা ফুটা রক্ত জরানো পায়ে দুহাতে আকড়ে ছিলাম ঠিক একশতো আটটি ফুটন্ত নীলপদ্ম,
মনে মনে ভেবেছিলাম তোমার সামনে হাটু গেরে বসে বলবো,
পরীণিতা……তুমি কি আমার হবে??
কিন্তু না,
যে হাতে আকড়ে ছিলাম তোমার শখের নীলপদ্ম,
সে হাতে আকড়ে ধরতে পারি নি তোমায়।
পরিণীতা….
তুমি তখন ঠিক তোমার নতুন স্বপ্নের মাঝ দরিয়াই,
সাত পাকের বাঁধনে বাধা হচ্ছিলো তোমার ঘাটছড়ার জীবন।
আমারি মতোন করে কাট কয়লা পুড়ে-পুড়ে
তোমার ঘাটছড়ার সাক্ষী ছিলো জলন্ত অগ্নি।
ভালেবাসা সেদিন বিষাক্ত মনে হয়েছিলো,
তবুও জেনেশুনে সে বিষ পান করেছি আমি ।
দু্ঃখ নদীতে বিলিয়েছি নিজের জীবন,
যার শেষ অবধি শুধুই বয়ে চলা।
পরিণীতার শেষ পরিণতি হলো একটা সুখের জীবন,
আমি একাকিত্বকে করেছি বরণ।
তবে তুমি সুখে থেকো,
জীবনের শেষ নিশ্বাস অবধি ভালো থেকো।

এশিয়াবিডি/ডেস্ক/কামরান
আরও সংবাদ