ক্ষণস্থায়ী জীবন!


প্রচলিত কথায়, জন্মের পর থেকেই একটা মানুষের জীবন শুরু হয়। কেউ জীবনের শুরু থেকেই তার জীবনের গল্পে সকল চাওয়া পাওয়া এক করে পেয়ে যায়। আর কেউ জন্ম থেকেই জীবনের নানামুখি গল্পের সম্মুখীন হয়।

আচ্ছা, আমাদের জীবন যুদ্ধের পরিচ্ছেদ কখন থেকে শুরু হয়? শুনেছি রুহ জগত থেকেই। এ পৃথিবীতে আসার জন্য মাতৃগর্ভেও হাজার সংগ্রাম করতে হয়েছে। কিন্তু এই সংগ্রামের সমাপ্তি কোথায়? মৃত্যুতেও এই সংগ্রামের অবসান ঘটেনা।

ইসলাম ধর্মে যারা বিশ্বাসী এবং আল্লাহর উপর ঈমান এনেছে তারা নিশ্চয়ই জানে কবরের আজাব, মুনকার-নাকির, কিয়ামত, হাশর, মিজান,পুলসিরাত, জান্নাত, জাহান্নাম এবং সবকিছুর শেষে আমাদের অন্বর্থ ঠিকানা নির্ভর করছে ঐ উপর ওয়ালার কাছেই। আমরা তো ক্ষণস্থায়ী জীবনটাকে উপভোগ করছি মাত্র।

আমরা মানুষ স্বভাবতই সবার সঙ্গে মিশতে চাই। সবচেয়ে চুপচাপ ব্যাক্তিও চাইবে তার কাছের কেউ না কেউ তার সঙ্গে থাকুক। যে তাকে সবসময় বুঝতে পারবে।

এখানেই কি শেষ। জীবনের আরেকধাপ আছে সেক্রিফাইজ। কাছের মানুষকেও খুশি রাখতে হলে অনেক কিছু সেক্রিফাইজ করতে হয়। আসলে এই জীবনটাই চলে সেক্রিফাইজ এর মধ্য দিয়ে। বিলিয়ে দেওয়ার মধ্যেও সুখ আছে, তবে সেই সুখটা উপভোগ করতে জানতে হয়।

আজ আপনার কাছে ১ হাজার টাকার একটা নোট আছে, সেই টাকাটা যদি কোনো গরীবকে দান করতে পারেন তাহলে আপনার আত্মার তৃপ্তি মিটবে। যদি পজেটিভ ভাবে এটা ভাবতে পারেন যে আপনার টাকা দিয়ে কেউ একজন দু’মুটো খেতে পারবে অথবা কিছু করতে পারবে। আর যদি আপনার মনে আক্ষেপ হয় ঐ টাকা দিয়ে আপনি কিছু কিনতে পারতেন তাহলে বিলিয়ে দেওয়ার সুখ আপনি কোনোদিন উপলব্ধি করতে পারবেন না। এই বিলিয়ে দেওয়ার আরেক নাম সেক্রিফাইজ।

পরিস্থিতির স্বীকার হয়ে আমাদের কখনও কোনো প্রিয় জিনিসও ছাড়তে হয়। আবার এই সমাজে বসবাস করতে গিয়ে সমাজের গন্ডির বাইরে বের হয়েও অনেক কিছু করা যায়না। রাষ্ট্রের যেমন কিছু আইন নির্দিষ্ট থাকে, সমাজেরও কিছু রীতিনীতি সীমাবদ্ধ থাকে। আপনি চাইলেও এখান থেকে বের হতে পারবেন না।

আমাদের জীবনের লড়াইয়ে কখন হারজিত থাকবেই। আপনি হেরে গেছেন মানে অপর একজন জিতে গিয়ে খুশি হয়েছে। আপনি তার খুশিটা উপভোগ করুন! দেখবেন সেখানেও একটা তৃপ্তি আছে।

মানুষের সুখ কোথায় জানেন? যখন আপনার উপর খুশি হয়ে আপনাকে সবাই ভালোবাসবে তখন যে শান্তি খুজে পাওয়া যাবে তা হারানো মণি মুক্তা ফিরে পাওয়ার আনন্দের চেয়েও মধুর। কিছু ছেড়ে দিলেও যদি সবাই আপনার উপর খুশি হয়, তাহলে হোক না সেটা সাত রাজার ধন। ছেড়ে দিন তার খুশিতে আপনি হাসুন। ছেড়ে দিয়েই তো জিতে যাবেন আপনি।

লেখকঃ তরুণ লেখিকা 

এশিয়াবিডি/ডেস্ক/কামরান

আরও সংবাদ