কবিতাঃ দুঃখের শেষটায়

 দুঃখের শেষটায়

মো. জিয়াউল হক

আমি যতটুকু না কষ্ট পেয়েছি
তার চেয়ে ঢের কষ্ট পেয়েছে উৎসবের আবহাওয়া,
তোমার জন্য অপেক্ষা মিছে মিছে হওয়ায়
সমুদ্রের পানি হয়ে গেছে নীল থেকে ঘোলাটে
ঝড়ো হাওয়ায় গাছের কচি ডাল ভেঙে পড়ছে
পাতারা দূরে কোথাও লুকিয়ে যাচ্ছে লজ্জায়
তোমার আমার রাস্তা ঢেকে গেছে আবর্জনায়
সূর্য যেন ভেঙচি কাটা জিহবা।
মাঝেমধ্যে মাঠে গা হেলিয়ে শুয়ে ভাবি
আমাকেই বা কেন ডাকবে, আমিই বা কার?
যেন মনে হয় ভালোবাসাহীন শরণার্থী।
শরনার্থীরাও তো ভালো সহানুভূতি দিয়ে হউক
বা তাদের অধিকারকে স্বীকৃতি দিয়ে হউক,
তারাও ভালোবাসা পায়, তিন বেলা খাবার পায়,
আমি তো তাদের চেয়েও অধম,
ভালোবাসাহীন অনাথ সম্ভোগ দুঃখের শেষটায়।
তবে দুঃখের শেষটায়
কল্পনাটা মরে যায় নি,
এই তো সেদিন স্বপ্ন দেখলাম,
আমি দরজার খিল খুলে দেখি
বাড়িয়ে দেয়া একটি হাত, আমি স্পর্শ করলাম,
সেই হীম শীতল হাত,
কতো কতো স্পর্শ দিয়েছিলো আমায়,
তারপর দেখি জামা, সেই ফ্যাশনদূরস্থ জামা,
তারপর দেখি চোখ,
সেই কতো কতো ভাষা শিখিয়েছিলো আমায়,
তারপর দেখি চুল
সেই কতো কতো রোমান্টিক স্বপ্নগুলোর ঠিকানা,
তারপর দেখি পা
সেই কতো কতো পা ফেলা গুনতে থাকা।
একবার তাকে বলেছিলাম
তুমি যদি দশ পা দূরে যাও,
মনে হয় আমার আত্না ও দশ পা লম্বা হয়ে গেছে।
তারপর দেখতে দেখতে তার স্বরূপ উন্মোচন
যেন অপেক্ষার শেষ পালা, সে চাইছে সর্বময় ভালোবাসা
একেবারে শেষটা চাইছে, এক্ষুনি দিতে হবে, সেকেন্ডের মধ্যে
সে চাওয়াতে কমতি নেই, নিখুঁত চাওয়া, উৎসবের চাওয়া
যেন শিকারির চিৎকার, সবকিছু কেন্দ্রীভূত, সত্য আসন্ন,
আক্ষেপ বিলোপ, যেন স্বাধীনতা খোলা চুল,
জানালা থাকবে উন্মোচিত, গাছের ডালা খাবে দোল,
আলো হবে ঢেউ, চোখ হবে একেকটি কাব্যিক শব্দ,
ঠোঁট হবে শরণার্থী থেকে বড়লোক, স্পর্শ হবে নতুন পাতা,
রাস্তা হবে কারু শিল্পীর স্বপ্ন, জীবন হবে হুলি খেলার রঙচটা,
যেন দুহাত আজলা ভরে এনেছে জীবনের সব পূর্ণতা।
শেষে সে কান মলা দিয়ে বলছে
আর বলবে ভালোবাসাহীন শরণার্থী?
তারপর?
তারপর ওফ বলার পর স্বপ্ন ভেঙে গেলো
হয়ে গেলাম আমি আবার সেই আগের মতোন,
যেন আবর্জনায় পড়ে থাকা ধলা স্বপ্ন,
উৎকট গন্ধে সেই স্বপ্নের মৃত্যু হবে,
আমার কাছে তো স্বপ্ন একটি বীজ
এই বীজে হয়তো হয়েছে মৃত্য,
আরেকটি বীজ হয়তো তার চেয়ে ঢের স্বপ্নীল।

এশিয়াবিডি/ডেস্ক/কেকে
আরও সংবাদ