এপ্রিল মাসে ক্ষতবিক্ষত ছিল রাজনগর!


এপ্রিল মাসে মৌলভীবাজার জেলার মধ্যে নানা ঘটনার কারণে আলোচনার শীর্ষে ছিল রাজনগর উপজেলা। এ মাসে উপজেলায় হত্যা, আত্মহত্যা, সংঘর্ষ, মাদক উদ্ধার সহ আলোচিত ১১টি ঘটনা ঘটে।

ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে দুই গ্রুপের মধ্যে গুলাগুলিও হয়। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১১ রাউন্ড ফাঁকা রাবার বুলেট ছুড়ে। জেলার সচেতন মহল মনে করছেন আইন শৃঙ্খলার অবনতি এবং দলীয় কোন্দলের কারণেই এমনটি হচ্ছে।

পরিসংখ্যানে দেখা গেছে এপ্রিল মাসে এ উপজেলায় সংঘর্ষ হয়েছে ৬ টি। এতে আহত হয়েছেন অর্ধশতেরও বেশি। এর মধ্যে অনেকের অবস্থা আশংকাজন। এছাড়াও অগ্নিকান্ড, সড়ক দূর্ঘটনা ও আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটেছে।

বিগত মাসের পৃষ্টা উল্টালেই দেখা যায়, ৩০ এপ্রিল রাতে উপজেলার মুন্সিবাজার ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ছালেক মিয়া ও চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী রাহেল মিয়া’র অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। বর্তমান চেয়ারম্যান ছালেক মিয়ার ভাই জুনেদ মিয়া’র (৪০) অবস্থা অশংকাজনক হওয়ায় তাকে সিলেট ওসমানী হাসপাতাল থেকে ঢাকায় নেয়া হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ ১১ রাউন্ড ফাঁকা রাবার বুলেট ছুড়ে। তার উভয়ই আ’লীগের সমর্থক।

২৯ এপ্রিল রাতে উপজেলার মুন্সিবাজারে সংঘর্ষে সাবেক এক ইউপি চেয়ারম্যানের ছেলে শাহান আহমদ গুরুত্বর আহত হন।

২৬ এপ্রিল উপজেলার উত্তরভাগ এলাকার রাবেয়া নামের এক গৃহবধূর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ ও স্থানীয়রা বলছেন, স্বামী ও স্বামীর বাড়ির লোকদের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে রাবেয়া আত্মহত্যা করেন।

২৫ এপ্রিল রাতে উপজেলার দক্ষিণ বালিগাঁও (মোরালী) গ্রামে পূর্ব শক্রুতার জেরে প্রতিবেশিদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে ব্যবসায়ী শাহাজান মিয়া গুরুত্বর আহত হন।

২৪ এপ্রিল রাতে উপজেলার কামারচাক ইউনিয়নে কথাকাটাকাটির জেরে দু’পক্ষের মুখোমুখি সংঘর্ষে ৫ জন আহত হন।

২৩ এপ্রিল দুপুরে উপজেলার উত্তরভাগ চা-বাগানে বালু উত্তলনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে বাগান ম্যানেজারসহ ৭ জন আহত হয়েছেন। এতে উত্তেজিত চা-শ্রমিকরা ২ টি মোটরসাইকেল পুড়ান।

১৪ এপ্রিল সকালে উপজেলার তেলিজুড়ি গ্রামে রাজনগর টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ নির্মাণে কাজ চলাকালিন সময় মাসুক মিয়া (৪০) নামের এক বাবুর্চি নিহত হন। পরিবারের দাবি তাকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে।

১১ এপ্রিল সকালে উপজেলার কামারচাকে প্রতিবেশীর হামলায় মোমেনা ও তার ভাইসহ গুরুতর আহত হন ৩ জন।

৯ এপ্রিল রাতে উপজেলার সদর ইউনিয়নের পাঠানটুলা গ্রামের মোস্তফা বকসের বাড়িতে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ১০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

২ এপ্রিল রাত ১০টায় উপজেলার খলাগাঁও থেকে ১১৮ পিস ইয়াবা সহ এক মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করে পুলিশ।

এছাড়াও ২ এপ্রিল শুক্রবার উপজেলার লুয়াইউনি এলাকায় মৌলভীবাজার-কুলাউড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের বাসের ধাক্কায় ২ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হন।

উপজেলর সচেতন নাগরিকরা বলছেন, আইন শৃঙ্খলার অবনতির কারনেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

রাজনগর মেধা ও সংস্কৃতি বিকাশ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আকলু মিয়া চৌধুরী বলেন, প্রতিটি সংঘর্ষের পিছনে আগামী ইউপি নির্বাচনের আবাস পাওয়া যাচ্ছে। নির্বাচনে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই মারামারি হচ্ছে। দেখা গেছে ঘটনার পরপরই ক্ষমতাশীন দলের নেতাকর্মীরা দু’দিকে বিভক্ত হয়ে যান। সর্বপরি উপজেলা আ’লীগ দুভাগে বিভক্ত থাকায় নীতি বর্হিভুত কর্মকান্ড প্রকট আকার ধারণ করছে।

রাজনগর থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল হাসিম বলেন, এ মাসে এমন কোনো বড় ঘটনা ঘটেনি, যার জন্য আইন শৃঙ্খলার অবনতি বলা যাবেনা। তবে মুন্সিবাজারে একটি বড় ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া ২/১টি ঘটনা ঘটতেই পারে।

এশিয়াবিডি/সারাবাংলা 
আরও সংবাদ