ঈদুল ফিত্বর : বর্জনীয় কাজ


আল-হামদুলিল্লাহ! দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনা করার পর মুমিন মুসলমানদের জন্য খুশির বার্তা নিয়ে আগমন করবে পবিত্র ঈদুল ফিত্বর। এই দিনটি আল্লাহর পক্ষ থেকে মুমিন মুসলমানদের জন্য অন্যতম একটি নিয়ামত। তাই মহান মালিকের নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করার নিমিত্তে ঐ দিন খুশি উৎযাপন করতে গিয়ে আমাদের এমন কোন কাজ করা উচিত হবে না যে কাজগুলো কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী। বরং এই সমস্ত গুনাহের কাজ বর্জন করা আমাদের একান্ত কর্তব্য। ঈদের দিনের বর্জনীয় কাজগুলো হলো-

ফরজ নামাজে আলসতা না করা।

ঈদের আনন্দে আমরা এমনভাবে উদাসীন হয়ে থাকি যে, ঐ দিনের ফরজ নামাজ আদায়ে অলসতা করি বা আদায় করি না।যা গ্রহণযোগ্য নয় বরং মারাত্মক গুনাহের কাজ। সূরা মাউনের ৪ ও ৫ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হচ্ছে- “অতএব, দুর্ভোগ সেই নামাজীদের জন্য, যারা তাদের নামাজ আদায়ের ব্যাপারে অমনোযোগী”।

ঈদের দিন রোজা না রাখা।

ইসলামী শরীয়তে ঈদের দিন রোজা রাখা নিষেধ। তাই এই দিন রোজা রাখা থেকে বিরত থাকতে হবে। সহীহ বুখারী ও মুসলিম শরীফের হাদীসে এসেছে- “হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুদিন রোজা রাখতে নিষেধ করেছেন- কুরবানীর ঈদের দিন আর ঈদুল ফিত্বরের দিন”।

 নফল নামাজ আদায় না করা।

ঈদের দিন ঈদের নামাজের আগে বা পরে ঘরে, ঈদগাহে অথবা মাসজিদে কোন নফল নামাজ না পড়া। সহীহ বুখারী শরীফের হাদীসে এসেছে- “হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত বিলাল (রাঃ) কে সঙ্গে নিয়ে ঈদুল
ফিত্বরের দিন বের হয়ে দুই রাকত নামাজ আদায় করেন। তিনি এর পূর্বে ও পরে কোন নামাজ আদায় করেননি”।

 বেহুদা কাজে সময় ব্যয় না করা।

ঈদের রাত ও দিন হচ্ছে গুনাহগার বান্দাদের গুনাহ মাফ করানোর অন্যতম একটি সুযোগ। তাই লক্ষ্য রাখতে হবে ঐ সময় যেন বেহুদা রাত জাগরণ ও দিনে বেহুদা কাজে সময় নষ্ট না করি। মনে রাখবেন মুমিনের গুণাবলির মধ্যে অন্যতম একটি হচ্ছে অনর্থক কথা ও কাজ থেকে বিমুখ থাকা। সূরা মুমিনুন এর ৩ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হচ্ছে- “(মুমিন হচ্ছে তারা) যারা অনর্থক কথা ও কাজ থেকে বিরত থাকে”।

 অপচয়-অপব্যয় না করা।

অপচয় ও অপব্যয় একটি খারাপ অভ্যাস ও নিন্দনীয় কাজ। অপচয়ের সঙ্গে রয়েছে অহংকারের সম্পর্ক। নিজের বাহাদুরি প্রকাশের মনোভাব। অন্যদিকে অপব্যয়ের সঙ্গে রয়েছে শরীয়তের বিধান লঙ্ঘনের সম্পর্ক। অপচয় ও অপব্যয় মানুষের ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে অবক্ষয় ডেকে আনে। যে কারণে ইসলামে অপচয় ও অপব্যয় দুটিই নিষিদ্ধ। ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী কোনো কাজ বৈধ হলেও সে ক্ষেত্রেও যদি প্রয়োজনাতিরিক্ত ব্যয় করা হয় তবে তাকে ইসরাফ বা অপচয় হিসেবে দেখা হয়। ইসলাম বৈধ কাজেও মাত্রাতিরিক্ত ব্যয় সমর্থন করে না। অবৈধ কাজে ব্যয় করাকে অপব্যয় বলা হয়। সুতরাং ঈদের খুশি উৎযাপন করতে গিয়ে নতুন কাপড় কিনার নামে বা বিভিন্ন আইটেমের খাবার তৈরি করতে গিয়ে অপচয় করা থেকে বিরত থাকতে হবে। যেহেতু অপচয় করা শয়তানের কাজ। সূরা বনী ইসরাঈলের ২৬ ও ২৭ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হচ্ছে- “নিশ্চয় অপব্যয়কারীরা শয়তানের ভাই। আর শয়তান তার রবের প্রতি খুবই অকৃতজ্ঞ। আর আত্মীয়কে তার হক দিয়ে দাও এবং মিসকীন ও মুসাফিরকেও। আর কোনভাবেই অপব্যয় করো না”।

মহান আল্লাহ বলেন হে আমার বান্দারা তোমরা খাও, পান করো ও অপচয় করো না। যেমন এ সম্পর্কে সূরা আরাফের ৩১ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হচ্ছে- “হে বনী আদম, তোমরা প্রতি নামাজে তোমাদের বেশ-ভূষা গ্রহণ করো এবং খাও, পান করো ও অপচয় করো না। নিশ্চয় তিনি অপচয়কারীদেরকে পছন্দ করেন না”।
ইসলামে অপচয়-অপব্যয়ের পাশাপাশি কৃপণতারও বিরোধিতা করা হয়েছে। ব্যয়ের ক্ষেত্রে ইসলামে মধ্যপন্থা অনুসরণকে উৎসাহিত করা হয়েছে। মধ্যবর্তী অবস্থানে থেকে সবগুলো কাজ করা মুমিনের অন্যতম একটি গুণ। এ বিষয়ে সূরা ফুরকানের ৬৭ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হচ্ছে- “আর তারা যখন ব্যয় করে তখন অপব্যয় করে না এবং কার্পণ্যও করে না। বরং মাঝামাঝি অবস্থানে থাকে”।

সুতরাং নতুন কাপড়ের নামে বা বিভিন্ন আইটেমের খাবারের নামে অপচয়-অপব্যয় যাতে না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সমাজে অনেক গরীব-মিসকীন রয়েছে যারা এক টুকরো কাপড়ের জন্য নিজের লজ্জা ডেকে রাখতে পারছে না।আবার অনেক আছে এই দিনে রান্না করার মত কিছুই তার ঘরে নেই। আর ঐ সময় যদি সামর্থবানরা অপচয় করেন তাহলে অবশ্যই এসবের জন্য মহান মালিকের কাছে জবাবদিহি করতে হবে সেদিকে খেয়াল রাখা একান্ত কর্তব্য।

 ঈদের দিন ক্ববর জিয়ারতকে নির্দিষ্ট না করা।

বছরের যে কোন দিনের যে কোন সময় ক্ববর জিয়ারত করা জায়েজ হলেও অনেকে ঈদের দিনকে জিয়ারতের জন্য নির্দিষ্ট করে থাকেন, যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরাম থেকে সাব্যস্ত হয়নি। অতএব ঈদের দিনকে ক্ববর জিয়ারতের জন্য নির্দিষ্ট করা যাবে না। তবে যারা সারা বছর করেন তাদের ঐ দিন করতে অসুবিধা নেই। সুনানে আবু-দাউদ শরীফের হাদীসে এসেছে- “হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- তোমরা তোমাদের ঘরগুলোকে ক্ববরস্থানে পরিণত করো না। এবং আমার ক্ববরকে উৎসবের স্থানে পরিণত করো না। তোমরা আমার উপর দরূদ পাঠ করো। তোমরা যেখানেই থাকো না কেন তোমাদের দরূদ আমার কাছে পৌছানো হবে”। সহীহ মুসলিম শরীফের হাদীসে এসেছে- “হযরত আয়শা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- যে ব্যক্তি এমন কোন কাজ করলো যাতে আমাদের নির্দেশনা নেই, তা প্রত্যাখ্যাত হবে”।

 জুয়া খেলা, মদ পান ও আতশবাজি না করা।

ঈদের খুশি উৎযাপন করার নামে অনেকেই এদিন জুয়া খেলা বা আতশবাজি করে থাকে যেগুলো শরীয়ত বিরোধী কাজ। অবশ্যই এগুলো কখনও করা জায়েজ নয়। সূরা মাঈদার ৯০ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হচ্ছে- “হে ঈমানদারগণ! মদ, জুয়া, মূর্তি, ভাগ্য নির্ণয়ের তীর এগুলো বস্তুত শয়তানের এক একটি ঘৃণ্য কাজ। অতএব, এসব থেকে দূরে থাকো, যাতে তোমরা সফল হতে পারো”।

 মানুষকে কষ্ট না দেওয়া।

ঈদের দিনে অনেকে এমন কাজ করেন যা মানুষকে কষ্ট দেয়। যেমন, রাস্তা আটকিয়ে মানুষের কাছ থেকে টাকা নেওয়া, গাড়ী হায়ার করে উচ্চ আওয়াজে হরণ বাজানো বা গান বাজানো সহ এমন কোন কাজ করা যাবে না যেটার দ্বারা অন্য মানুষের কষ্ট হয়। সহীহ বুখারী ও মুসলিম শরীফের হাদীসে এসেছে- “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- সে-ই প্রকৃত মুসলিম, যার জিহ্বা ও হাত হতে সকল মুসলিম নিরাপদ এবং সে-ই প্রকৃত মুহাজির, আল্লাহ যা নিষেধ করেছেন তা যে ত্যাগ করে”।

নারী পুরুষের অবাধ মেলামেশা না করা।

ইসলামী শরীয়তে নারী পুরুষের পর্দা করা ফরজ হলেও সামাজিক ভাবে এটাকে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয় না। বিশেষ করে কোন অনুষ্ঠান বা ঈদের খুশির নামে এটাকে বেশি লংঘন করা হয়। যাদের সাথে দেখা করা শরীয়তের অনুমোদিত আছে তাদের সাথে দেখা করতে পারেন। কিন্তু যাদের সাথে দেখা করা শরীয়ত অনুমোদিত নয় এমন কারো সাথে দেখা করা যাবে না। প্রয়োজনে পর্দার আড়ালে থেকে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। সূরা নূরের ৩০ ও ৩১ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হচ্ছে- “(হে নাবী) আপনি মুমিন পুরুষদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি অবনত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গের হেফাজত করে। এটিতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা রয়েছে। তাদের কর্ম সম্পর্কে আল্লাহ অবহিত”।

“মুমিন নারীদেরকেও বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি অবনত রাখে, তাদের গুপ্তাঙ্গের হেফাজত করে, (সাধারণত) যেটুকু প্রকাশিত হয় তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, বুকের ওপর ওড়না দিয়ে রাখে এবং নিজেদের স্বামী, বাবা, স্বামীর বাবা (শ্বশুর), ছেলে, স্বামীর ছেলে, ভাই, ভাইয়ের ছেলে, বোনের ছেলে, নিজেদের (মুসলিম) মহিলা, মালিকানাধীন দাসী, অধীনস্থ যৌন চাহিদামুক্ত (বৃদ্ধ) পুরুষ কিংবা নারীসংসর্গে অনাসক্ত শিশুদের ব্যতীত অন্যদের কাছে নিজেদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। এ ছাড়াও তারা যেন নিজেদের ঢেকে-রাখা সাজ-সজ্জা প্রকাশ হয়ে পড়ে এমনভাবে নিজেদের পা না ফেলে (জোরে জোরে না হাঁটে)। হে ঈমানদারগণ! তোমরা সবাই আল্লাহর কাছে তওবা করো, যাতে তোমরা সফল হও”।

বিজাতীদের অনুসরণ না করা।

বর্তমান অধুনিক যুগের সাথে তাল মিলাতে গিয়ে আমাদের মুসলিম সমাজে প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই বিজাতীদের অনুসরণ ব্যাপকভাবে পরিলক্ষিত হয়। পোশাক-পরিচ্ছদে, চাল-চলনে, শুভেচ্ছা বিনিময়ে বিজাতীদের অনুসরণ অনুকরণে লিপ্ত হয়ে পড়েছে মুসলমান যুবক যুবতীরা। বিশেষ করে তাদের কোন উৎসব বা আমাদের ঈদের দিন এ কাজটি অন্যান্য দিনের চেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হয়। অথচ একজন মুসলমানের জন্য এগুলো করা মোটেই উচিত নয়। কারণ এগুলো ইসলামী শরীয়ত সম্মত নয়। বরং বিজাতীদের কাজের সাথে মিল থাকে এরকম কাজ যারা করবে তাদের সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কঠিন হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। সুনানে আবু দাউদ শরীফের হাদীসে এসেছে- “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- যে ব্যাক্তি কোন বিধর্মীদের অনুসরণ করবে সে তাদের দলভুক্ত বলে গণ্য হবে”।

নারী-পুরুষ একে অপরের বেশ ধারণ না করা।

ঈদের দিন আরেকটি কাজ অন্যান্য দিনের চেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হয়। সেটা হচ্ছে পোশাক-পরিচ্ছদ, চাল-চলন ও সাজ সজ্জার ক্ষেত্রে পুরুষ নারীর বেশ ধারণ ও নারী পুরুষের বেশ ধারণ করে। অথচ এই রকম করাটা ইসলামী শরীয়তে সম্পূর্ণ হারাম। সুনানে আবু-দাউদ শরীফের হাদীসে এসেছে- “হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম অভিসম্পাত করেছেন ঐসব পুরুষকে যারা নারীর অনুরুপ পোশাক পরে এবং ঐসব নারীকে যে পুরুষের অনুরুপ পোশাক পরিধান করে”।

 নারীরা অশালীন পোশাক পরিধান না করা।

ঈদ উপলক্ষে খোলামেলা, অশালীন পোশাকে, নগ্ন, ও অর্ধনগ্ন পোশাকে রাস্তা ঘাটে বের হওয়ার কোন অনুমতি ইসলামি শরীয়তে নেই। বরং এরকম পোশাক পরিধান করা ইসলামী শরীয়তে সব সময় নিষিদ্ধ। সহীহ মুসলিম শরীফের হাদীসে এসেছে- “হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- জাহান্নামবাসী দুপ্রকার মানুষ, আমি যাদের (এ পর্যন্ত) দেখিনি। একদল মানুষ, যাদের সঙ্গে গরুর লেজের মতো চাবুক থাকবে, তা দ্বারা তারা লোকজনকে মারবে এবং একদল স্ত্রী লোক, যারা কাপড় পরিহিত উলঙ্গ, যারা অন্যদের আকর্ষণকারিণী ও আকৃষ্টা, তাদের মাথার চুলের অবস্থা উটের হেলে পড়া কুঁজের মতো। ওরা জান্নাতে যেতে পারবে না, এমনকি তার সুগন্ধিও পাবেনা অথচ এত এত দূর হতে তার সুঘ্রাণ পাওয়া যায়”।

সর্বোপরি ঈদের খুশি উৎযাপন করতে গিয়ে ইসলামী শরীয়ত অনুমোদিত নয় এমন কোন কাজ করা থেকে আমাদের সবাইকে বিরত থাকতে হবে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে হেদায়ত দান করে কুরআন-সুন্নাহ মোতাবেক আমল করার তৌফিক দান করুন। আমাদের সবার রোজাগুলোকে ক্ববুল করুন। (আমিন)

এশিয়াবিডি/ডেস্ক/কেকে
আরও সংবাদ