১০ বছর ধরে প্রবাসে থেকেও চাকুরীতে বহাল মৌলভীবাজারের এক শিক্ষক

মৌলভীবাজারের এক শিক্ষক আমেরিকায় বসবাস করেও চাকুরিতে বহাল রয়েছেন ১০ বছর ধরে । প্রতি বছর  একবার দেশে এসে কিছুদিন ডিউটি করে বেতন ভাতা উত্তোলন করে আবারো ফিরে যাচ্ছেন আমেরিকায়।

এই অদ্ভুত ঘটনাটি জেলার বড়লেখা উপজেলার তালিমপুর বাহারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের। প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞান শিক্ষক সুবোধ রঞ্জন দাস ১০ বছর ধরে আমেরিকায় বসবাস করেও তার চাকুরী ঠিকই রয়েছে। বেতন-ভাতা উত্তোলনেও সমস্যা হচ্ছে না। অভিযোগ রয়েছে স্কুল পরিচালনা কমিটিকে ম্যানেজ করে বছরের পর বছর বিধি বর্হিভুত সুবিধা ভোগ করছেন ওই শিক্ষক।

বিজ্ঞান শিক্ষক সুবোধ রঞ্জন দাস ২০০২ সালের ১৮ এপ্রিল তালিমপুর বাহারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগদান করেন। ২০০৯ সালের ৬ জুলাই আমেরিকায় যাওয়ার বিষয়টি গোপন রেখে ১ বছরের অস্বাভাবিক ছুটি (ইএলও) নিয়ে আমেরিকায় পাড়ি জমান। ২৫২ দিন পর দেশে ফিরে পুনরায় স্কুলে যোগদান করেন। ১১ মাস শিক্ষকতার পর পুনরায় আমেরিকা চলে যান।

২০১১ সালের ২০ নভেম্বর দেশে ফিরে পুনরায় শিক্ষকতায় নিয়োজিত হন। ২০১৩ সালের ৮ অক্টোবর থেকে ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর পর্যন্ত প্রায় ১ বছর আমেরিকায় অবস্থান করে পুনরায় চাকুরীতে বহাল হন। এভাবে ২০০৯ সাল থেকে ওই শিক্ষক আমেরিকা থেকে বছরে একবার দেশে বেড়াতে এসে ইচ্ছেমত স্কুলে যোগদান করেন এবং বেতন ভাতা উত্তোলন করেন।

সর্বশেষ চলিত বছরের ১ জানুয়ারী আমেরিকা থেকে দেশে ফিরে ১৭ জুন পর্যন্ত স্কুলের শ্রেণী কার্যক্রমে অংশ নেন। ১৮ জুন থেকে অদ্যাবদি কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিত থেকেও ওই শিক্ষকের চাকুরী বহাল রয়েছে।

প্রধান শিক্ষক মুরাদ মালিক বিজ্ঞান শিক্ষক সুবোধ রঞ্জন দাস ১০ বছর ধরে অস্বাভাবিক ছুটি নিয়ে আমেরিকায় বসবাসের সত্যতা স্বীকার করে জানান, এব্যাপারে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নিতে তিনি একাধিকবার প্রস্তাব করলেও স্কুল কমিটি তাকে সম্মত হয়নি।

স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুল কুদ্দুছ জানান, বিজ্ঞান শিক্ষক সুবোধ রঞ্জন দাস তার স্কুলের সহকারী শিক্ষক। বিধি অনুযায়ীই তিনি ছুটিতে রয়েছেন। এর বাইরে অন্য কোন কিছু তার জানা নেই।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হাওলাদার আজিজুল ইসলাম জানান, একজন এমপিওভুক্ত সহকারী শিক্ষক ১০ বছর ধরে অস্বাভাবিক ছুটি নিয়ে চাকুরীতে বহাল থাকা নজিরবিহীন ঘটনা। এতে শিক্ষার্থীদের অপুরণীয় ক্ষতি হয়েছে।

অব্যাহতভাবে একই ধরণের ছুটি নেয়া স্বেচ্ছাচারিতার সামিল এবং ইচ্ছেমত যোগদান করা সম্পুর্ণ বিধিবর্হিভুত কাজ। এরজন্য অবশ্যই স্কুল ম্যানেজিং কমিটি দায়ী। খোঁজ নিয়ে এ ব্যাপারে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও সংবাদ