সিলেট বাস টার্মিনালের মাত্র আধা কিলোমিটার সড়ক যেনো নরকের ভোগান্তি
মাত্র আধা কিলোমিটার সড়ক। এই দূরত্বেই যেনো নরকের ভোগান্তি। কোনো অজোপাড়া গাঁয়ে নয়, খোদ নগরের অভ্যন্তরেই সড়কটির অবস্থান। সিলেট নগরের দক্ষিণ সুরমা রেলক্রসিং থেকে পুরাতন স্টেশন ঘেঁষে যাওয়া সড়কটি দিয়ে যাতায়াত করেন নসিবা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা। এই সড়ক ধরেই যাতায়াত নতুন রেলস্টেশন ও সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে। গত অর্ধযুগ ধরে গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির এমন হাল জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, ৬ বছর আগে সড়কটিতে কেবল প্রলেপ দেওয়া হয়েছিল। এরপর পিচ উঠে গিয়ে সড়কের বেহালদশা হয়েছে। সড়কের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় বৃষ্টির পানি জমে থাকে। ফলে প্রতিদিনিই ঘটে দুর্ঘটনা। এছাড়া সড়কের পাশে ফেলে রাখা হয় ময়লার স্তূপ। ছাত্রীরা পায়ে হেঁটে এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করলে অনেক সময় চলাচল করা গাড়ির কারণে ময়লা পানি ছিটকে এসে পড়ে গায়ে। একইসঙ্গে সড়কের পাশে রেস্তোরাঁগুলোর স্তূপ করে রাখা ময়লার ভাগাড় পরিষ্কার হয় না। দুর্গন্ধে নিশ্বাস নেওয়া দায় হয়ে পড়ে পথচারীর।
সরেজমিন দেখা যায়, পুরাতন রেলস্টেশনের লোহার সীমানা প্রাচীর ঘেঁষা সড়কটির অন্যপাশে কাঠের পাইকারি দোকান ও কয়েকটি রেস্তোরাঁ রয়েছে। রেস্তোরাঁলোর উচ্ছিষ্ট আবর্জনা ফেলে রাখা রাস্তার পাশে। দেখে যে কেউ মন্তব্য করবেন-‘ঈশ্বর থাকেন ওই ভদ্রপল্লীতে, এখানে তাহাকে খুঁজিয়া পাওয়া যাইবে না’ বা তার নজর যেনো এই সড়কে পড়েনি। তাই দুর্ঘটনার ঘটছে প্রতিনিয়ত। আর খানাখন্দক লাফিয়ে চলতে হয় পথচারী ও স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের।
স্থানীয় ভার্থখলার বাসিন্দা আইনজীবী সহকারী জুয়েল আহমদ বলেন, গত ৬ বছর আগে সড়কটি প্রলেপ দেওয়া হয়। এর আগে আরও ৬ বছর ভাঙা ছিল। সংস্কার কাজে অনিয়মের কারণে সড়কটির এমন বেহাল অবস্থা। অথচ এই সড়ক ধরেই স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করে। আর বাস টার্মিনাল ও নতুন রেলস্টেশনে যাতায়াতের সহজ মাধ্যম এই সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানান তিনি।
সিলেটের দক্ষিণ সুরমা পুরাতন স্টেশনের রেলক্রসিং সংলগ্ন সিএনজিচালিত অটোরিকশা স্ট্যান্ডের (রেজি: নং-৭০৭) সভাপতি দুলাল আহমদ বলেন, দূরত্ব আধা কিলোমিটার হলেও সড়কটি গুরুত্বপূর্ণ। রেলস্টেশনে সংক্ষেপে যাওয়া যায় এই সড়ক ধরে। কিন্তু খানাখন্দ ভরা সড়কেটিতে প্রতিদিন চোখের সামনে ৪/৫টি দুর্ঘটনা ঘটে।
তিনি বলেন, বছর খানেক ধরে শুনতেছি কাজ হবে। এই হবে অবস্থায়ই থেকে গেছে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের ২৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌফিক বক্স লিপন বলেন, সড়কটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ৬ বছর আগে এই সড়ক সংস্কার করা হয়েছিল। গত সিসিক নির্বাচনের আগে ১ কোটি ২৮ লাখ টাকায় সড়কটির টেন্ডার হয়েছে। আগে পিচ ঢালাইয়ের কাজ হয়েছিল, এবার আরসিসি ঢালাই হবে। এখানে ৭৮ লাখ টাকায় আলাদা একটি ড্রেনের কাজ হওয়ার কথা। কিন্তু খুব খারাপ একজন ঠিকাদার কাজ পেয়েছে। গত এক বছরে ড্রেনের কাজ অর্ধেকও করতে পারেনি।
তিনি বলেন, বর্তমানে কাজের জন্য যে ইট আনা হয়েছিল। তা মেয়রের পছন্দ হয়নি। ইটের গুণগত মান পরীক্ষার জন্য পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী রিতেশ বড়ুয়া বলেন, সড়কটিতে ৬০ মিটার জায়গা বেশি ভাঙা। দীর্ঘদিন ভাঙা থাকা সড়কটি মেরামতের উদ্যোগ নিচ্ছেন তারা।