অ্যাসেঞ্জের দাবি : যুক্তরাষ্ট্র তার সন্তানের ডিএনএ চুরি করেছে
বিকল্প সংবাদমাধ্যম উইকিলিকস-এর প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ জানিয়েছেন, যুক্তরাজ্যের আদালতে কঠিন বাস্তবতার মধ্য দিয়ে দিন পার করছেন তিনি। সোমবার প্রত্যর্পণ সংক্রান্ত মামলায় আদালতে হাজির করা হয় তাকে। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আবারও গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ এনেছেন তিনি। অ্যাসাঞ্জ অভিযোগ করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র তার সন্তানের ডিএনএ চুরি করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণের মামলায় সোমবার লন্ডনের ওয়েস্টমিনিস্টার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয় উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে। আদালতে অ্যাসাঞ্জের আইনজীবীরা পূর্ণাঙ্গ শুনানি শুরু স্থগিত রেখে প্রমাণ উপস্থাপনে আরও সময় চান। তবে আদালতের পক্ষ থেকে শুনানি বিলম্বিত করতে অস্বীকৃতি জানানো হয়। বিচারক জানান, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে এ সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ শুনানি শুরু হবে। এই মামলাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছেন অ্যাসাঞ্জের আইনজীবীরা।
বিচারক অ্যাসাঞ্জের কাছে আদালতের ঘটনাক্রম বুঝতে পেরেছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সত্যিই না। আমি ভালো করে চিন্তাও করতে পারি না। আমি বুঝতে পারছি না এটা কিভাবে ন্যায়সঙ্গত হয়। এই সুপারপাওয়ার [যুক্তরাষ্ট্র] দশ বছর ধরে মামলা প্রস্তুত করেছে আর আমি আমার লেখার কাছেই পৌঁছাতে পারছি না। আমি যেখানে আছি সেখানে কোনও কিছু করা খুবই কঠিন আর তাদের রয়েছে সীমাহীন সুযোগসুবিধা।’
অ্যাসাঞ্জ আলাদতকে আরও বলেন, ‘তারা বলছে সাংবাদিক ও হুইসেলব্লোয়াররা মানুষের শত্রু। নথিপত্র নিয়ে তারা অন্যায্য সুবিধা পাচ্ছে। তারা আমার মনস্তত্ব জানে, জীবনের খুঁটিনাটি জানে। তারা আমার সন্তানের ডিএনএ চুরি করেছে। এখানে যা ঘটছে তা ন্যায়সঙ্গত নয়’। অ্যাসাঞ্জের আইনজীবী মার্ক সামারস দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্র তার মক্কেলের ওপর গুপ্তচরবৃত্তি করছে।
২০১২ সালের জুন থেকে লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাসে রাজনৈতিক আশ্রয়ে ছিলেন উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। গত ১১ এপ্রিল রাজনৈতিক আশ্রয় প্রত্যাহার করে তাকে ব্রিটিশ পুলিশের হাতে তুলে দেয় ইকুয়েডর। ওইদিনই তাকে জামিনের শর্ত ভঙ্গের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে ব্রিটিশ আদালত। তখন থেকে বেলমার্শ নামক ‘যুক্তরাজ্যের গুয়ানতানামো বে’ খ্যাত কুখ্যাত কারাগারে রাখা হয়েছে তাকে। ১ মে অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে ৫০ সপ্তাহের সাজা ঘোষণা করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রে তার বিরুদ্ধে সরকারি কম্পিউটার হ্যাক ও গুপ্তচর আইন লঙ্ঘনসহ ১৮টি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এসব অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার ১৭৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।