বীজতলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি!
ঘন কুয়াশায় ক্ষতিগ্রস্ত বীজতলা
ঘন কুয়াশায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বরো ধানের বীজতলা। এতে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা।
কুয়াশায় ধানের চারার গোড়া পচে যাচ্ছে। চারা হলুদ হয়ে দুর্বল হয়ে পড়ছে। মারাত্মক ক্ষতির আশঙ্কায় শঙ্কিত কৃষক।
বোরো ধানের চারা রক্ষায় সাদা পলিথিন শিট দিয়ে বীজতলা ঢেকে রাখাসহ বেশকিছু পরামর্শ দিয়েছে কৃষি বিভাগ। পরামর্শ অনুযায়ী বীজতলার পরিচর্যা করা সম্ভব হলে ক্ষতি কম হবে বলে আশা করছেন কৃষি কর্মকর্তারা।
খুলনা জেলা কৃষি দপ্তরের সূত্র মতে, এবার জেলায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬০ হাজার ৯১৫ হেক্টর জমিতে। যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ২ হাজার ৩৩৫ হেক্টর বেশি। জেলায় বার্ষিক খাদ্য চাহিদা রয়েছে ৪ লাখ ২৭ হাজার ১৯১ মেট্রিক টন।
খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার কৃষক মো. আতিয়ার রহমান বলেন, ‘এমনিতেই কারেন্ট পোকার আক্রমণ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে আমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারপর আবার ঘন কুয়াশা এবং অতিরিক্ত শীতে বোরো বীজতলাও হুমকির মুখে রয়েছে। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।’
বটিয়াঘাটা উপজেলার কৃষক রামকৃষ্ণ মণ্ডল জানান, ধান বিক্রি করতে গেলে, ধানের দাম নেই। কিন্তু বীজ কিনতে গেলে দাম আকাশ ছোঁয়া। তারপরও নতুন স্বপ্ন নিয়ে বোরো বীজতলা বুনেছি। এখন কুয়াশা ও শীতে কী হয় বুঝতে পারছি না।
ঘন কুয়াশা ও অতিরিক্ত শীত থেকে বোরো বীজতলা রক্ষার লক্ষ্যে রূপসা উপজেলা কৃষি অফিসের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুর রহমান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ বিষয়ে পরামর্শ সচেতন করছেন।
তিনি বলেছেন,‘চারা বৃদ্ধিতে নিম্ন তাপমাত্রার প্রভাব কমিয়ে আনার জন্য ঘন কুয়াশা ও বেশি শীতের সময়ে বোরো ধানের বীজতলা সকাল ১০টা থেকে সাদা পলিথিন শিট দিয়ে ঢেকে রেখে সন্ধ্যার পূর্বে তা সরিয়ে ফেলতে হবে। এ ছাড়া সন্ধ্যায় পানি সেচ দিয়ে বীজতলার চারা ডুবিয়ে দিতে হবে এবং সকালে সেই পানি বের করে দিতে হবে। প্রতিদিন সকালে দড়ি টেনে দিয়ে বীজতলার চারায় জমাকৃত শিশির ঝরিয়ে দিতে হবে। বীজতলায় প্রতি শতকে ২০০ গ্রাম টিএসপি, ১৫০ গ্রাম এমওপি ও ৪০০ গ্রাম জিপসাম সার প্রয়োগ করতে হবে। শৈত্য প্রবাহের কারণে বোরো ধানের বীজতলার চারা হলদে হয়ে গেলে প্রতি শতক জমিতে ২৮০ গ্রাম হারে ইউরিয়া সার প্রয়োগ করতে হবে। এ ছাড়া ১০ লিটার পানিতে ৬০ গ্রাম পটাশ ও ৬০ গ্রাম জিপসাম সার মিশিয়ে বীজতলায় স্প্রে করতে হবে। বীজতলার চারার গোড়া বা পাতা পচা রোগ দেখা গেলে ব্যাভিস্টিন বা মেনকোজেব গ্রুপের যেকোনো একটি ছত্রাকনাশক প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। যতদিন শৈত্য প্রবাহ থাকে ততদিন এ পদ্ধতি চালিয়ে যেতে হবে।’
খুলনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ পঙ্কজ কান্তি মজুমদার বলেন, ঘন কুয়াশা ও অতিরিক্ত শীত থেকে বোরো বীজতলা রক্ষা করতে হলে প্রথমত পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। ভোরে উষ্ণ গরম পানি ছেটানো এবং রাতে ঠাণ্ডা পানি নামিয়ে দিতে হবে। এসব পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারলে তেমন ক্ষতি হবে না।’
এশিয়াবিডি/ডেস্ক/সাইফ