মৌলভীবাজারে কথাকাটাকাটির জের ধরে যুবককে হত্যা

মৌলভীবাজারের সদর উপজেলার নাজিরাবাদ ইউনিয়নে কথাকাটাকাটির জের ধরে যুবককে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। গত ২ ফেব্রুয়ারি রাত ৭টায় নাজিরাবাদ ইউনিয়নের কমলাকলস গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় মৌলভীবাজার মডেল থানায় নিহতের বাবা আব্দুল মোতালিব মামলা দায়ের করেছেন। গত বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে সিলেটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে আহত যুবক ফয়ছল মিয়া (৩৮) মৃত্যুবরণ করেন।

নিহত ফয়ছল মিয়া সদর উপজেলার নাজিরাবাদ ইউনিয়নের জ্যাকান্দি গ্রামের আব্দুল মোতালিবের ছেলে।

মামলার আসামীরা হলেন- সদর উপজেলার নাজিরাবাদ ইউনিয়নের কমলাকলস গ্রামের সাহিদ মিয়ার ছেলে নাহিদ মিয়া, ছালিক বকসের ছেলে সোহাগ বকস, আজাদ বকসের ছেলে আহমদ বকস, ফিরোজ বকসের ছেলে রিপন বকস, মৃত মকবুল বেগের ছেলে জুনেদ বেগ, দুরুদ বকসের ছেলে নাঈম বকস, মৃত নুনু বকসের ছেলে রাহি বকস।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আমার ছেলে ফয়ছল মিয়া (৩৮) ও নাতি মাহিন আহমদ (২০) গত ০২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৬টায় কমলাকলস গ্রামের দরগার ওয়াজ মাহফিলে যায়। ওয়াজ মাহফিলের পূর্ব পাশে অবস্থিত চায়ের দোকানে চা খাওয়ার জন্য গেলে ০১ নং বিবাদী নাহিদ মিয়া (২৫) এর সাথে কথা কাটাকাটি হয়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে উক্ত বিবাদী আমার ছেলে ও নাতিকে এলোপাতারি মারধর করে। তখন উপস্থিত লোকজন উক্ত ঘটনার বিষয়টি আপোষ মিমাংসা করিয়া দেয় কিন্তু বিবাদী নাহিদ মিয়া কারো কথার তোয়াক্কা না করিয়া আমার ছেলে ও নাতির উপর একই দিন রাত অনুমান ৭ টায় সময় আমার ছেলে ফয়ছল মিয়া (৩৮) এবং আমার নাতি মাহিন আহমদ (২০) ওয়াজ শুনিয়া বাড়ীর উদ্দেশ্যে রওনা দিয়া মৌলভীবাজার সদর মডেল থানাধীন নাজিরাবাদ ইউপিছ কমলাকলস গ্রামের ৩ নং বিবাদী আহমদ বক্স এর বাড়ীর সামনে রাস্তার উপর আসিলে পূর্বের ঘটনার জের ধরিয়া উল্লেখিত সকল বিবাদীগন এক হয়ে পথরোধ করিয়া আমার ছেলে ফয়ছল মিয়াকে গালিগালাজ করিতে থাকে। আমার ছেলে গালিগালাজ করিতে নিষেধ করিলে বিবাদীরা আমার ছেলের উপর ক্ষিপ্ত হইয়া তাহার হাতে থাকা দা দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আমার ছেলে ফয়ছল মিয়াকে কুপ দেয়।

বিবাদীদের আঘাতে আমার ছেলে ফয়ছল মিয়া মাটিতে পড়ে যায়। পরবর্তীতে ঘটনার বিষয়টি আমি মোবাইল ফোনে অবগত হইয়া দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হইয়া স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় ভিকটিম ফয়ছল মিয়া (৩৮) এবং মাহিন আহমদ( ২০ মিয়তে উদ্ধার করিয়া মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসিলে মাহিন আহমদ (২০) কে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ভর্তি করায় এবং আমার ছেলে ফয়ছল মিয়া (৩৮) এর অবস্থা আশংকাজনক হওয় চিকিৎসার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। সিলেট এমএজি অসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পর্যাপ্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা না থাকায় আমার ছেলেকে ওয়েসিস হাসপাতালে ভর্তি করিয়া চিকিৎসায় ব্যবস্থা করি।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সকালে সিলেটের ওয়েসিস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফয়ছল মিয়া (৩৮) মৃত্যুবরণ করেন। বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা রাতে নিহতকে নিজ গ্রামে জানাযার নামাজ শেষে দাফন করা হয়।

নিহতের বাবা আব্দুল মোতালিব বলেন, আমার ছেলে চৌদ্দ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে মৃত্যু বরণ করেছে। যারা আমার ছেলেকে হত্যা করেছে আমি তাদের বিচার চাই।

মৌলভীবাজার মডেল থানার ওসি ইয়াসিনুল হক বলেন, ঘটনাটি খুবই দু:খজনক। আমরা লাশ ময়নাতদন্ত করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছি। আসামীরা পলাতক রয়েছেন। তাদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।

এশিয়াবিডি/ডেস্ক/কেকে

আরও সংবাদ