ফের বাড়লো পেঁয়াজের ঝাঁজ, আদা-রসুনেও ঝাল বাড়ছে
সপ্তাহের ব্যবধানে ফের বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। দেশি পেঁয়াজ কেজি প্রতি পাঁচ টাকা বাড়লেও আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ কেজিতে বেড়েছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে দেশি পেঁয়াজের সংকট আর আমদানিক করা ভারতীয় পেঁয়াজ বাজারে না আসায় এ বাড়তি দাম।
এদিকে, পেঁয়াজের বাড়তি দামের পাশাপাশি প্রতি কেজি রসুন ও আদার দাম বেড়েছে ১০ থেকে ৩০ টাকা।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) রাজধানীর কারওয়ান বাজার (খুচরা ও পাইকারি), কাঁঠাল বাগান কাঁচা বাজার, মালিবাগ বাজার, মালিবাগ রেলগেট বাজার, শান্তিনগর ও সেগুন বাগিচা কাঁচা বাজার ঘুরে এ সব চিত্র দেখা গেছে।
এ সব বাজারে এক সপ্তাহে আগে খুচরা প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ১১০ থেকে ১১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা কেজি দরে। আর আমদানি করা মিশর ও মিয়ানমার পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে যথাক্রমে ৯৫ থেকে ১০০ টাকা এবং ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে।
অথচ সপ্তাহ যেতে না যেতেই সরবরাহ কমেছে এমন অজুহাতে ভারতীয় পেঁয়াজ কেজি প্রতি দাম বেড়েছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত। এর আগে ভারতীয় পেঁয়াজ খুচরা বাজারে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও এখন তা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে। আর পাইকারি বাজারে বিক্রি প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০৮ থেকে ১১০ টাকা। একইভাবে পাইকারি বাজারে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০৬ টাকা। এ সব বাজারে খুচরা দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হতে দেখা গেছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে।
এদিকে, পেঁয়াজের দাম বাড়ার সঙ্গে বেড়েছে আদা ও রসুনের দাম। এ সব বাজারে খুচরা প্রতিকেজি দেশি আদা বিক্রি হতে দেখা গেছে (আকারভেদে) ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, কাঁচা আদা ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি দরে। আর থাইল্যান্ডের আদা বিক্রি হতে দেখা গেছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা, মিয়ানমারের আদা ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা কেজি দরে। দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে (নাটোর) ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, দেশি ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা, দেশি এক দানা রসুন ২০০ থেকে ২২০ টাকা, চায়না রসুন ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে।
এক সপ্তাহ আগে খুচরা প্রতিকেজি দেশি আদা বিক্রি হয়েছে (আকারভেদে) ১৪০ থেকে ১৭০ টাকা, কাঁচা আদা ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে। আর থাইল্যান্ডের আদা বিক্রি হতে দেখা গেছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, মিয়ানমারের আদা ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে। দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে (নাটোর) ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা, দেশি ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, দেশি এক দানা ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, চায়না রসুন ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে।
এ নিয়ে ক্রেতা বিক্রেতাদের মধ্যে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। বিক্রেতারা বলছেন বাজারে পেঁয়াজ সংকটের কারণে দাম বেড়েছে আর ক্রেতারা বলছেন বাজার মনিটরিং না করাই ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।
হাবিব নামে কারওয়ান বাজারের এক ক্রেতা বলেন, প্রতিনিয়ত নিত্য পণ্যের দাম বাড়ছে কিন্তু বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কার্যকরী কোনো ভূমিকা চোখে পড়ছে না। নিয়মিত মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বাজার মনিটরিং করা হলে দাম অবশ্যই নাগালের মধ্যে চলে আসবে। না হলে এভাবেই সাধারণ ক্রেতার পকেট কাটবে বিক্রেতারা।
হাসিবুল নামে এক খুচরা বিক্রেতা বলেন, আমাদের বাজার উঠা-নামা করে প্রতিনিয়ত। পাইকারি বাজারে দাম কমলে খুচরা বাজারে দাম কমে যাবে, পাইকারি বাজারে দাম বাড়লে এখানেও বাড়ে। এ সব দাম ক্ষণস্থায়ী, আমদানি বেশি হলে দাম কমে আসবে।
এ বিষয়ে কারওয়ান বাজারের পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রেতা এবং স্বদেশ বাণিজ্যলয়ের মালিক মো. অন্তর বলেন, পূজার পর থেকে এখন পর্যন্ত ভারতে পেঁয়াজ (মোটা পেঁয়াজ) বাজারে আসেনি। এ কারণে এ পেঁয়াজের সংকট রয়েছে, দামও বেড়েছে। তবে এ পেঁয়াজ বাজারে এলে দাম কমে যাবে বলে জানান তিনি।