পাখিবন্ধু বাপন
বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, তিনি মূলত পরিবেশ ও বন্যপ্রাণী বিষয়ক সাংবাদিক। ২০১৯ সালে প্রকাশিত পরিবেশ বিষয়ক তার শতাধিক প্রতিবেদন ও ফিচার পর্যালোচনা করে অনলাইন ক্যাটাগরিতে তাকে ‘কনজারভেশন মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ।
অতিথি পাখি ও পরিবেশ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন৷ তিনি জানান, মানুষ প্রয়োজনে যেমন দেশ-বিদেশ ঘুরে বেড়ায়, তেমনি পাখিরাও ঘুরে বেড়ান আপন মনে। কখনো খাদ্যের খোঁজে, কখনো বাস্তুসংস্থানের জন্য আবার কখনো টিকে থাকার লড়াইয়ে। শীতের প্রকোপ সইতে না পেরে প্রতি বছর নভেম্বর-ডিসেম্বরে সাইবেরিয়া, চীন, মঙ্গোলিয়া ও নেপাল থেকে অসংখ্য পরিযায়ী পাখি আসে বাংলাদেশে।
বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপনবলেন, প্রাকৃতিকভাবে নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ুর দেশ বাংলাদেশ। এজন্য পাখিদের পছন্দের তালিকায় এদেশ শীর্ষে। আর বাংলাদেশে শীতকালীন অতিথি পাখির অভয়ারণ্য হিসেবে জন্মলগ্ন থেকেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সুপ্রসিদ্ধি। এখানে ১০ থেকে ১২টি লেক থাকলেও জাবির ৪টি লেকে মূলত অতিথি পাখির বিচরণ সবচেয়ে বেশি। শীত চলে গেলে ফেব্রুয়ারি-মার্চের দিকে পুনরায় তারা ফিরে যায় নিজেদের আবাসস্থলে।
পাখি সংরক্ষণে গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০০১ সাল থেকে প্রতি বছর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পাখি মেলার আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ। এবার ছিল ২০তম আসর। অনুষ্ঠানে পাখি ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় এ বছর প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার ‘কনজারভেশন মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড-২০২০’ পেয়েছেন বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বপন৷ গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে পাখি সংরক্ষণে অবদান রাখায় তাকে সম্মাননা ক্রেস্ট ও সনদপত্র তুলে দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম।
বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য জানান, পাখি প্রকৃতির একটি বড় অংশ। পাখি ছাড়া প্রকৃতি হোঁচট খাবে। তাই পাখি রক্ষায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
সম্মাননা পাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন বলেন, পাখি, ফুল, বন্যপ্রাণীসহ প্রকৃতির প্রতি আমাদের সুস্থতার প্রতীক। ওরা ভালো না থাকলেই মানুষ ও সমাজ ভালো থাকবে না। কিন্তু ওরাই আজ সবচেয়ে বেশি বিপন্ন। এই সম্মাননা আমাকে কাজের প্রতি আরো অনুপ্রাণিত করবে।
বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন ২০০৯ সালের ডিসেম্বরে দৈনিক কালের কণ্ঠের ‘শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি’ হিসেবে কাজ শুরু করেন। বর্তমানে বাংলানিউজের ‘ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট’ হিসেবে কর্মরত।
সাংবাদিকতার পাশাপাশি তিনি কণ্ঠধ্বনি আবৃত্তিচক্র নামে একটি আবৃত্তি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের পরিচালক। স্থানীয় শিশু-কিশোরদের মাঝে শুদ্ধ উচ্চারণ ও আবৃত্তিচর্চায় নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন।
বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য শখের বসে বনজঙ্গলে ঘুরে নতুন পাখির ছবি তুলেন। তার ‘প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য’ বিষয়ক নানা প্রতিবেদন/ফিচার এবং আলোকচিত্র পাঠক মহলে সমাদৃত।
লেখক: শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজে, মৌলভীবাজার
সূত্রঃ রাইজিংবিডি ডট কম
এশিয়াবিডি/ডেস্ক/সাইফ