বাদুড়ের আক্রমণে অস্তিত্বহীন দেশি লিচু!


মৌলভীবাজার জেলা লিচুর জন্য বিখ্যাত না হলেও জেলার মাটি লিচু চাষের উপযোগী। প্রতিবছরই ব্যাপক লিচু চাষ হয়ে থাকে। তবে বানিজ্যিকভাবে ততোটা চা হয়না। লিচু পরিপক্ব হওয়ার আগেই বাদুড় আর কাঠবিড়ালির আক্রমণে পুরো গাছ সাবাড় হয়ে যায়।

জেলার জুড়ী উপজেলার বেশ কয়েকটি বাড়ি ঘুরে দেখা যায়, প্রত্যেক বাড়িতেই দুই একটি লিচু গাছ রয়েছে। গাছেও প্রচুর লিচু এসেছে। লিচুর ওজনে গাছ নুয়ে পড়েছে। অনেকে দেখা গেছে বাদুড়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে পুরো গাছে নেট লাগিয়ে দিয়েছে। অনেক গাছে দেখা গেছে বৈদ্যুতিক বাল্ব লাগানো। যাতে রাতে বাদুড় এই বাল্বের আলোয় কিছুটা ভয় পায়। আবার কাঠবিড়ালি থেকে রক্ষা পেতে গাছে ঝুলানো হয়েছে টিন শেডের বিশেষ পাত্র, সাথে আছে লোহার দন্ড। এটি একটি ঘন্টার নেয় কাজ করে। সাথে দড়ি বেঁধে বাড়ির বারান্দায় লাগিয়ে দেয়া হয়। এবং কিছুক্ষণ পর পর এই দরিতে টান দিলে ঘন্টার মতো আওয়াজ করে। ফলে বাদুড়, কাঠবিড়ালি গাছে বেশিক্ষণ থাকে না।

কথা হয় পাতিলাসাঙ্গন এলাকার আব্দুল হাফিজের সাথে। তিনি বলেন, আমারা লিচু গাছে এবার ভালোই লিচু আসছিলো। কিন্তু বাদুড় আর কাঠবিড়ালির কারনে লিচু টিকানো যায় নি।

স্থানীয় খোরশের আলম জানান, লিচু পাকার পরে দেখতে পরিপূর্ণ ভালো লাগে। কিন্তু ভিতরে জীবিত পুকা পাওয়া যায় ফলে লিচু খাওয়া যায় না। ফলে পুরো লিচু বিনষ্ট হয়ে যায়। আর বাদুড়ের জন্য সুস্থ ভাবে পাকে না। তার আগে খেয়ে শেষ করে ফেলে, এটা প্রতিনিয়ত

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর মৌলভীবাজার জেলায় ৩২১ হেক্টর জমিতে লিচুর চাষাবাদ হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, প্রতি হেক্টর জমিতে সাড়ে ৮ টন করে মোট ২৫৬৮ টন লিচু উৎপাদন হবে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি শ্রীমঙ্গলে ১০৯ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। কুলাউড়া- ৪৫, রাজনগরে- ৪১, বড়লেখায়- ৩৫, কমলগঞ্জে- ৩৫, জুড়ীতে- ৩২, সদরে- ২৪ হেক্টর জমিতে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মৌলভীবাজার উপ- পরিচালক কাজী লুৎফুল বারী বলেন, এ বছর লিচুর ফলন ভালো হবে। ঐকন যে লিচুগুলো বাজারে পাওয়া যাবে সবগুলোই স্থানীয়। মৌলভীবাজারে বেশি চাষ হচ্ছে বারি-২ ও চায়না -৩ লিচু। জেলার বিভিন্ন জায়গায় বানিজ্যিকভাবে লিচু চাষ হচ্ছে।

তিনি বলেন, বাদুড়ের কারনে নেটিং করতে হয়। পুরো লিচু গাছ নেট দিয়ে ডাকিয়ে দিতে হয়। পোকামাকড়ের জন্য আমাদের কীটনাশক থাকলেও বন্যপ্রাণী বাদুড়, কাঠবিড়ালি, বানরের জন্য কোনো ধরনের কীটনাশক নাই। এগুলো তাড়াইয়া রাখতে হবে।

এশিয়াবিডি/কামরান/সাইফুল্লাহ

আরও সংবাদ