এক কিলোমিটারের দায় কেউ নিতে চায় না
দুই উপজেলার প্রকৌশল দপ্তরের ঠেলাঠেলির কারণে ১ কিলোমিটার রাস্তা পাকা হচ্ছে না। ৫ কিলোমিটার রাস্তাটির মাঝখানের ১ কিলোমিটার ছাড়া দুইপাশের বাকি ৪ কিলোমিটার পথ পিচঢালা। এই ১ কিলোমিটার মাটির রাস্তা।
ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলা এলজিইডি কর্তৃপক্ষ তাদের সীমানার আধা কিলোমিটার বাকি রেখে পাকা করেছেন, অন্যদিকে যশোর চৌগাছা উপজেলা এলজিইডি কর্তৃপক্ষও একইভাবে আধা কিলোমিটার বাদ রেখেই তাদের সীমানার বাকি রাস্তা পাকা করেছেন। ফলে মাঝের এই ১ কিলোমিটার মাটির রাস্তায় কষ্ট করেই চলাচল করতে হচ্ছে এলাকার মানুষকে।
এলাকাবাসি জানিয়েছেন, তারা উভয় দপ্তরে যোগাযোগ করেছেন কিন্তু রাস্তাটি আর পাকা হয়নি। গোটা রাস্তা পাকা হলেও মাঝের এই ১ কিলোমিটার যানবাহন চলাচল অনুপযোগী। পথচারীদের বর্ষার সময় কষ্ট করে এই ১ কিলোমিটার পার হতে হয়। আর এই সমস্যায় দুই উপজেলার মানুষের যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
সরেজমিনে ওই এলাকায় দিয়ে দেখা যায়, যশোরের চৌগাছা উপজেলার পুড়াপাড়া বাজারের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্ত দিয়ে আন্দুলিয়া সীমান্তে একটি রাস্তা চলে গেছে। এই রাস্তার আরেকটি শাখা গেছে রসুলপুর-ইদ্রাকপুর হয়ে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার মান্দারতলা বাজার। পুড়াপাড়া থেকে মান্দারতলার দূরত্ব ৫ কিলোমিটার। এই রাস্তাটি ভারত সীমান্তবর্তী যশোরের চৌগাছা ও ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার সংযোগ স্থাপন করেছে।
স্থানীয় রসুলপুর গ্রামের আমিরুল ইসলাম জানান, তারা চৌগাছা উপজেলার বাসিন্দা হলেও নানা প্রয়োজনে মহেশপুর তথা যাদবপুর যেতে হয়। কিন্তু রাস্তাটির মাঝের মাটির অংশে বর্ষার সময় প্রচন্ড কাদা হয়। কাদার কারনে ওই সময় মানুষ চলাচল করতে পারে না।
তিনি জানান, চৌগাছা এলজিইডি কর্তৃপক্ষ বেশ কয়েক বছর পূর্বে রসুলপুর গ্রামের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত পাকা রাস্তা তৈরি করেছেন। এই রাস্তা তৈরির সময় চৌগাছা সীমানার আধা কিলোমিটার পাকা করার কাজ বাদ রেখে দেয়।
তিনি আরো জানান, একইভাবে মহেশপুর উপজেলা প্রকৌশল দপ্তরও তাদের সীমানার আধা কিলোমিটার রেখে রাস্তাটি পাকা করে। কেন উভয় পক্ষ এভাবে বাদ রেখে পাকা করেছে, তা তাদের জানা নেই। তবে সংশ্লিষ্ট অফিসে যোগাযোগ করলে তারা একে অপরকে দোষারোপ করেন। চৌগাছা কর্তৃপক্ষ বলেন- এটা মহেশপুর করবে, আর মহেশপুর বলে- চৌগাছা করবে।
মহেশপুর উপজেলার ইদ্রাকপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল লতিফ বলেন, ‘বছরের বেশিরভাগ সময় এই রাস্তার কাঁচা অংশটি চলাচলের অনুপযোগী থাকে। ফলে পুড়াপাড়া থেকে যাদবপুর আসা-যাওয়া করা মানুষের কষ্টের শেষ থাকে না। এই রাস্তাটির দুই পাশের সাহাপুর, রসুলপুর, ইদ্রাকপুর ও মান্দারতলার মানুষের কষ্ট করেই চলাচল করতে হয়।’
তিনি জানান, এই এক কিলোমিটার রাস্তা পাকা করার দাবি নিয়ে তারা দুই দপ্তরে ঘুরেছেন। কিন্তু তাদের ঠেলাঠেলির কারণে রাস্তাটি হচ্ছে না।
এ বিষয়ে যশোর চৌগাছা উপজেলা এলজিইডি’র প্রকৌশলী মো. আব্দুল মতিন জানান, তিনি অল্প সময় এই উপজেলায় যোগদান করেছেন। যে কারণে তিনি বিস্তারিত বলতে পারছেন না। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবেন এবং ওই রাস্তাটি যাতে দ্রুত পাকা করা যায় সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন। অপরদিকে মহেশপুর উপজেলা প্রকৌশলী সেলিম রেজা জানান, বিষয়টি তিনি অবগত। আশা করছেন দ্রুত রাস্তাটি পাকা করার কাজ হবে।
এশিয়াবিডি/ডেস্ক/সাইফ

