এমসি কলেজে ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ চায় শিবির!

সিলেটের ঐতিহ্যবাহী এমসি কলেজ ক্যাম্পাস ও ছাত্রাবাসে শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে ছাত্রলীগের সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধসহ ৮ দফা দাবিতে কলেজ প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির এমসি কলেজ শাখা।

বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) দুপুরে এমসি কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. সালেহ আহমদের হাতে স্মারকলিপি তুলে দেন এমসি কলেজ ছাত্রশিবির সভাপতি ইমদাদুল হক ও সেক্রেটারী শাহীন আহমদ।

স্মারকলিপিতে এমসি কলেজ শিবির ছাত্রশিবির নেতৃবৃন্দ বলেন, সিলেট এমসি কলেজ একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। অসংখ্য আন্দোলন সংগ্রামের সূতিকাগার। হাজারো ঐতিহ্য ও দেশমাতৃকা-স্বাধীকার আন্দোলনে এর রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। এই প্রতিষ্ঠান জন্ম দিয়েছে অনেক জ্ঞানী-গুণী ও মহৎপ্রাণ ব্যক্তি।

নেতৃবৃন্দ বলেন, গত ২৫ সেপ্টেম্বর এমসি কলেজে স্বামীসহ বেড়াতে এসে এক গৃহবধু ছাত্রাবাসে সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী দ্বারা গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এমসি কলেজের ১২৮ বছরের ইতিহাসে এটি একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়। এ ক্ষত মুছে ফেলার নয়। এ ধরণের ঘৃণ্য ঘটনায় দুনিয়ার আনাচে কানাচে ছড়িয়ে থাকা এমসি কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা বিস্মিত। গুটি কয়েক সন্ত্রাসীদের হাতে এমসি কলেজের ঐতিহ্য বারবার পদদলিত হওয়ায় বর্তমান শিক্ষার্থীরা চরমভাবে ক্ষুদ্ধ।

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ২০১২ সালে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা সুপ্রাচীনকালের দৃষ্টিনন্দন কলেজ ছাত্রাবাস পুড়িয়ে ছাত্রাবাসগুলোকে বিরানভ‚মিতে পরিণত করে। ২০১৬ সালে বহিরাগত ছাত্রলীগ কর্মী বদরুল এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে। এমন পৈশাচিক ঘটনা এমসি কলেজের ইতিহাসে বিরল। শাসকদলের ছাত্র সংগঠন বিগদ এক যুগ ধরে অবৈধ দখলদারিত্ব, চাঁদাবাজি, মাস্তানির মাধ্যমে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে।

স্মারকলিপিতে শিবির নেতারা কলেজ ছাত্রাবাসে গণধর্ষণের জড়িত সকল ছাত্রলীগ কর্মীকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে স্থায়ী বহিষ্কার, সার্টিফিকেট রদ ও সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতে কলেজ প্রশাসনকে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা, কলেজ ক্যাম্পাস ও ছাত্রবাসে রাতের বেলা পর্যাপ্ত আলো নিশ্চিত করে পুরো ক্যাম্পাস ও ছাত্রাবাস সিসিটিভির আওতায় নিয়ে আসা এবং ক্যাম্পাস ছাত্রাবাসে শিক্ষার্থীদের বৈধ পরিচয়পত্রসহ আগমন ও প্রস্থান নিশ্চিত করা, অছাত্র ও বহিরাগতদের বের করে মেধার ভিত্তিতে সিট বরাদ্দ দেওয়া, ক্যাম্পাস ছাত্রাবাসের চারদিকে প্রাচীর নির্মাণ করা, কলেজ ও ছাত্রাবাসে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড রোধে ছাত্রলীগের সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা, শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত অভিযোগ বাক্স তৈরি ও জমা হওয়া অভিযোগের নিরপেক্ষ তদন্ত ও উপযুক্ত ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, ক্যাম্পাস ও ছাত্রাবাসে অস্ত্রের মহড়া, মাদক সেবন, র‌্যাগিং ও ইভটিজিং বন্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং ক্যাম্পাস ও ছাত্রাবাসে সকল ছাত্রসংগঠনের সহাবস্থান নিশ্চিত করার দাবি জানান।

কলেজ অধ্যক্ষ সালেহ আহমদ স্মারকলিপিতে পেশ করা দাবিসমূহ নিয়ে একাডেমিক কাউন্সিলে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে শিবির নেতাদের আশ্বস্ত করেন। এসময় কলেজ শিক্ষক পরিষদ সম্পাদক তৌফিক এজদানী চৌধুরীসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও কলেজ শিবির নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।

এশিয়াবিডি/প্রেস বিজ্ঞপ্তি
আরও সংবাদ