কিশোরগঞ্জে ১৪ দিনের শিশুকে বিক্রি করে দিল বাবা
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে ১৪ দিন বয়সের নবজাতক কন্যা রাধিয়া আক্তারকে ৭০ হাজার টাকায় বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে বাবার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার শিশুটির বাবা ফারুক ভুইয়া ও শিশুটির ক্রেতা জাকিয়া আক্তারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ঘটনাটি ঘটেছে কটিয়াদী উপজেলার মসুয়া ইউনিয়নের রামদী গ্রামে।
শিশু কন্যা রাধিয়ার মা রিনা খাতুন (৩৫) বলেন, আমার স্বামীর বাড়ি উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নের বালিরা গ্রামে। রামদী গ্রামে আমার বাবার বাড়িতে ১৪ দিন আগে রাধিয়ার জন্ম হয়। সোমবার বেলা ১১টার দিকে নবজাতক রাধিয়াকে ডাক্তার দেখানোর জন্য আমি হাসপাতালে যেতে চাইলে আমার স্বামী ফারুক আমাকে যেতে নিষেধ করেন এবং তিনি একাই রাধিয়াকে ডাক্তার দেখানোর জন্য নিয়ে যান।
দুপুর সাড়ে ১২টার সময় রাধিয়ার বাবা আমার ভাই শফিককে মোবাইল ফোনে জানান, রাধিয়াকে এক মহিলার কোলে রেখে প্রস্রাব করতে গেলে মহিলা রাধিয়াকে নিয়ে পালিয়ে যায়। এই সংবাদ শুনে আমি আমার মা ও ভাইকে নিয়ে হাসপাতালে যাই।
হাসপাতালে আমার স্বামী ও রাধিয়ার কোনো খোঁজ না পেয়ে রাধিয়ার বাবার মোবাইলে ফোন করলে তা বন্ধ পাই। এ ঘটনার পর আমরা আমার স্বামীর বাড়ি বালিরা গ্রামে গিয়ে শিশু এবং তার বাবার কোনো সন্ধান না পেয়ে থানায় এসে পুলিশের সহযোগিতা চাইলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে রাধিয়ার বাবাকে আটক করে।
তার দেয়া তথ্যানুযায়ী মসুয়া ইউনিয়নের বেতলা গ্রামের সুমন ভুইয়ার বাড়ি থেকে রাধিয়াকে উদ্ধার ও সুমনের স্ত্রী জাকিয়াকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
রিনা খাতুন আরও জানান, রাধিয়াসহ ১ ছেলে ও ২ মেয়ের মা তিনি। স্বামীর বাড়িতে তার বনিবনা না হওয়ায় বেশ কিছুদিন যাবৎ তিনি বাবার বাড়িতে অবস্থান করছিলেন।
কটিয়াদী মডেল থানায় গ্রেফতার হওয়া জাকিয়া আক্তার জানান, তার নিঃসন্তান বোনের জন্য ৭০ হাজার টাকায় তিনি রাধিয়াকে ক্রয় করেছিলেন।
কটিয়াদী মডেল থানার এসআই ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. মোস্তফা কামাল জানান, নবজাতক রাধিয়ার মা রিনা খাতুনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযান চালিয়ে রাধিয়ার বাবা ফারুক ভুইয়াকে গ্রেফতার করা হয়।
পরে তার দেয়া তথ্যমতে বেতলা গ্রাম থেকে জাকিয়া আক্তারকে গ্রেফতার এবং শিশুটিকে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। ফরিদ ভুইয়া ও জাকিয়া আক্তারকে বৃহস্পতিবার জেলা হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।