সড়ক আইনের ৯টি ধারার কনসিডার করা হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
সড়ক আইন মানার সংস্কৃতি চালু করা এবং দুর্ঘটনার ধারা কমিয়ে আনতে সরকার কাজ করছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, নতুন সড়ক আইনের কিছু কিছু অংশ আরও স্পষ্ট করা দরকার। সেসব জায়গায় আমরা কনসিডার করতে বলেছি। সে জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ৯টি ধারার কিছু কিছু বিষয় আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত কনসিডার করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) রাতে ধানমন্ডির নিজ বাসভবনে বাংলাদেশ পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘পুলিশের কাছে বলা হয়েছে, যাতে এসব বিষয় তারা কেয়ারফুলি হ্যান্ডেল করেন।’
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি ও সংসদ সদস্য শাজাহান খানের নেতৃত্বে সারা দেশের অন্তত ৩০ জন শ্রমিক নেতা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বৈঠকে পুলিশ ও বিআরটিএর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও অংশ নেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ফেডারেশন, আমাদের স্টেকহোল্ডাররা আমাদের কাছে যে দাবি করেছেন, যেমন ফিটনেস, লাইসেন্স বা আরও দুই-একটি দাবি যৌক্তিক। সে জন্য ৩০ জুন পর্যন্ত এসব জায়গায় আমরা অ্যাকশনে যাবো না। ৯টি ধারার মধ্যে কিছু আংশিক বিষয়ে শিথিলতা থাকবে। পুলিশের কাছে বলা হয়েছে যাতে তারা কেয়ারফুলি এসব বিষয় হ্যান্ডেল করেন। তবে কেউ যদি সড়কের মাঝখানে গাড়ি পার্কিং করে যানজটের সৃষ্টি করেন, তাহলে তাকেতো কনসিডার করা হবে না।’
চালকদের লাইসেন্স বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ড্রাইভিং লাইসেন্সের বিষয়ে যে যেভাবে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছে, তারা সেভাবেই চালাবে। আগামী ৩০ জুনের মধ্যে তারা লাইসেন্স হালনাগাদ বা উপযুক্ত লাইসেন্স সংগ্রহ করে নিবে। বিআরটিএ এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিবে। তবে কারো কাছে ভুয়া লাইসেন্স পেলে সঙ্গে সঙ্গে বাজেয়াপ্ত করা হবে। তারা নতুন করে সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে লাইসেন্স করে নিবে। এ ক্ষেত্রে লাইট/মিডিয়াম/হেবি লাইসেন্সের বিষয়টি বিবেচনায় উপযুক্ত লাইসেন্স করতে এবং যাদের লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে তারা নবায়ন করতে ৩০ জুন পর্যন্ত সময় পাবে।
এসময় নতুন আইনে কোনও সংশোধন আসবে কিনা জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কতগুলো বিষয় নিয়ে সুপারিশ এসেছে। সেগুলো আমরা যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে পাঠাবো। যোগাযোগ মন্ত্রণালয় যদি মনে করে এগুলো যথোপযুক্ত, তাহলে তারা সেখানে সিদ্ধান্ত নেবেন।’
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি ও সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, আইন হওয়ার সময় থেকেই কিছু কিছু বিষয় সংশোধনের দাবি আমরা জানিয়েছিলাম। আমরা কখনোই আইনের বিরোধিতা করিনি। আমরা আইন মানি এবং মানবো। কিন্তু আইনে কিছু অস্পষ্টতা রয়ে গেছে, সেগুলো দূর করে সঙ্গতিপূর্ণ করার দাবি জানিয়েছি আমরা।
‘আইনে উল্লেখিত কারাদণ্ড বিষয়ে আমাদের কোনো আপত্তি নেই, আমরা বলেছি, জরিমানার কথা। কারণ এতো পরিমাণ জরিমানা চালকরা কখনো দিতে পারবে না। আমরা বলেছি, আগের আইনে যে জরিমানা ছিল বর্তমান সময়ে সেই টাকার অনুপাতে যে টাকা দাড়ায় সে পরিমাণ জরিমানা নির্ধারণ করা হোক। আমাদের যে দাবি সেগুলো যদি ন্যায়সঙ্গত ও যুক্তিসঙ্গত মনে করে তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। আর ন্যায়সঙ্গত মনে না করলে আমাদের সঙ্গে কথা বললে আমরা মেনে নেবো।’
শাহজাহান খান আরও বলেন, আমরা ধর্মঘট ডাকিনি। ধর্মঘট-আন্দোলন আমাদের পেশা নয়। বিপদ হলে আমরা কথা বলি, না শুনলে আন্দোলনে যেতে হয়। মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমাদের ৩০ জুন পর্যন্ত সময় দিয়েছেন, আমরা সে পর্যন্ত অপেক্ষা করবো। তারপর যদি আমাদের দাবি মানা না হয়, তখন আমরা কর্মসূচি দেবো।