করোনা মোকাবিলায় প্রস্তুত সৌদির ২৫ হাসপাতাল
মহামারি করোনা ভাইরাস (কভিড-১৯) মোকাবিলায় ২৫টি হাসপাতাল প্রস্তুত রেখেছে মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম অধ্যুষিত রাষ্ট্র সৌদি আরব। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মূলত এসব হাসপাতালে রেখেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হবে। রবিবার (১ মার্চ) সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ আবদেল আলী তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, করোনায় আক্রান্ত রোগীদের পৃথকভাবে রাখার জন্য হাসপাতালগুলোর দুই হাজারের অধিক বেড প্রস্তুত রয়েছে। মূলত ভাইরাস মোকাবিলায় প্রাক সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে ব্যবস্থাটি নেওয়া হয়েছে।
আবদেল আলী আরও বলেন, বিদেশিদের ওমরাহ পালনের অধিকারও আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। তাছাড়া পবিত্র নগরী মদিনাতেও প্রবেশাধিকার বন্ধ রয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, পর্যটন ভিসা থাকলেও করোনা ভাইরাস ধরা পড়েছে এমন রাষ্ট্র থেকে আগত নাগরিকদের সৌদিতে প্রবেশে বাধা দিতেই কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্তটি নিয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনো দেশের নাম উল্লেখ করা হয়নি।
উল্লেখ্য, সৌদি সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে এখন পর্যন্ত দেশটিতে করোনা সংক্রমণের কথা স্বীকার করেনি। যদিও অন্যান্য সূত্র থেকে দেশটিতে এর সংক্রমণের খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে।
মোহাম্মদ আবদেল আলীর মতে, এখনো কারও করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। তাই সরকারের বাণিজ্যিক কার্যক্রমেও কোনো ব্যাঘাত ঘটবে না বরং এটি স্বাভাবিকই থাকবে।
বর্তমানে থাইল্যান্ড, তাইওয়ান, জাপান, যুক্তরাজ্য, ইসরায়েল, দক্ষিণ কোরিয়া এবং ভারতসহ বেশকিছু দেশে অজ্ঞাত এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা গেছে। তাছাড়া আতঙ্কে রয়েছে প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তানও। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রেও ভাইরাসের তাণ্ডব শুরু হয়েছে। আক্রান্তদের সবাই সম্প্রতি চীনে ভ্রমণ করেছেন কিংবা সেখানে বসবাস করেন।
এমনকি সিঙ্গাপুরেও কয়েকজন বাংলাদেশির করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তারা সকলেই বর্তমানে দেশটিতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরানেও ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে ভাইরাসটি।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এ ভাইরাস মানুষ ও প্রাণীদের ফুসফুসে সংক্রমণ করতে পারে। ভাইরাসজনিত ঠান্ডা বা ফ্লুর মতো হাঁচি-কাশির মাধ্যমে মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়ে পড়ছে করোনা ভাইরাস। এ ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার প্রধান লক্ষণগুলো হলো- শ্বাসকষ্ট, জ্বর, কাশি, নিউমোনিয়া ইত্যাদি। শরীরের এক বা একাধিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিষ্ক্রিয় হয়ে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হতে পারে।
সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয় হলো ভাইরাসটি নতুন হওয়ায় এখনো কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। এ ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় সংক্রমিত ব্যক্তিদের থেকে দূরে থাকা। তাই মানুষের শরীরে এমন উপসর্গ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চীনা বিজ্ঞানীরা।
সূত্র : রয়টার্স
এশিয়াবিডি/ডেস্ক/সাইফ