রাজনগরে চিরকুট লিখে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা!

রাজনগরে-চিরকুট-লিখে-স্কুলছাত্রীর-আত্মহত্যা
সিমলা আক্তারের লেখা চিরকুট। ছবিঃ প্রতিকি

মৌলভীবাজারে গলায় ফাঁস দিয়ে এক স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। তার পড়ার ঘর থেকে পরিবারের লোকজন একটি চিরকুট উদ্ধার করেছেন। বুধবার দুপুর ৩টার দিকে রাজনগর উপজেলার উত্তরভাগ ইউনিয়নের সুপ্রাকান্দি গ্রামে এঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্ত শেষে তার মৃতদেহ দাফন করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্কুলছাত্রীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার উত্তরভাগ ইউনিয়নের সুপ্রাকান্দি গ্রামের আওলাদ মিয়ার মেয়ে সিমলা আক্তার (১৬) কান্দিগাঁও উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবছর এস.এস.সি পরীক্ষা দেয়ার কথা ছিল। পার্শ্ববর্তী ফতেপুর ইউনিয়নের জোড়াপুর গ্রামের নানার বাড়ি থেকে সে লেখাপড়া করত। একমাস আগে তাকে নিজের বাড়িতে নেয় তার পরিবার। সেখান থেকে তাকে বিদ্যালয়ে আনা-নেয়ার জন্য ফতেপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের মোহাম্মদ আলী নামের এক সিএনজি অটোরিক্সা চালককে ভাড়ায় রাখা হয়। সম্প্রতি ওই চালক ও সিমলার সম্পর্ক নিয়ে এলাকার মানুষের মুখে মুখে নানা কথা ছড়িয়ে পড়ে। এব্যাপারে সে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ে। বুধবার দুপুরে নিজ বাড়িতে ঘরের তীরের সাথে গলায় ওড়না বেঁধে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। বিষয়টি টের পেয়ে তার স্বজনরা মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যার হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে তার মৃত্যুর পর পরিবারের সদস্যরা তার পড়ারঘর থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করেন। চিরকুটের একটি অংশে লেখা রয়েছে “আমার মৃত্যুর জন্য একমাত্র ডাইভার (ড্রাইভার) দায়ি। ডাইভারকে জেন (যেন) সঠিক শাস্তি দেওয়া হয়।” আরো একটি অংশে লেখা রয়েছে “ডাইভারদের বলছি বিশেষ করে জুলমানদের সঙ্গে ডাইভারদেরকে কার (কারো) বিষয়ে না জেনে মিথ্যা অপবাধ (অপবাদ) দিয় (দিও) না। এই অপবাধের (অপবাদের) কারণে সেই মানুষের জিবনও নিয়ে নিতে পারে। আল্লায় (আল্লাহ) সকলের মা বইন (বোন) দিছইন (দিয়েছেন)।”

নিহত সিমলার চাচা মালিক উস্তার বলেন, মৃতদেহ হাসপাতালে রেখে বাড়িতে এসে তার পড়ার ঘরে তল্লাসি করি। এসময় তার খাতার ভিতর থেকে চিঠির মতো লেখা একটি কাগজ পাই। সেখানে সে মৃত্যুর জন্য ড্রাইভারকে দায়ী করে লিখে গেছে। আমরা সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক এই ঘটনার বিচার চাই।

এব্যপারে রাজনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, মেয়েটি কি কারণে আত্মহত্যা করেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মেয়েটির মা বাদী হয়ে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছেন। মৃতদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তদন্ত করে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এশিয়াবিডি/ডেস্ক/কামরান 
আরও সংবাদ