হারুনের জামিন স্থগিত চাইবে দুদক
শুল্কফাঁকির অভিযোগের মামলায় পাঁচ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপির সংসদ সদস্য (এমপি) হারুন অর রশীদকে হাইকোর্টের দেওয়া ছয় মাসের জামিনের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করবে দুর্নীতি দমন কমিশন।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) এ তথ্য জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
তিনি জানান, মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) জামিন স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে সিএমপি অথবা লিভ টু আপিল দায়ের করবো।
এর আগে হারুন অর রশিদের করা আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে সোমবার বিচারপতি মো. শওকত হোসেনের একক বেঞ্চ তাকে জামিন দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, মাহবুব উদ্দিন খোকন ও সৈয়দ মিজানুর রহমান।
দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। পরে খুরশীদ আলম খান জানান, আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে ছয় মাসের জামিন দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি জরিমানার দণ্ড স্থগিত করে বিচারিক আদালতের নথি তলব করেছেন।
তিনি আরও জানান, এ মামলায় এক বছর তিন মাস সাজা খেটেছেন এমন বিবেচনায় তাকে জামিন দেওয়া হয়েছে।
গত ২১ অক্টোবর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম হারুন অর রশীদকে পাঁচ বছরের দণ্ডের রায় দেন। কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাকে ৫০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
মামলার পলাতক আসামি চ্যানেল নাইনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এনায়েতুর রহমান বাপ্পীকে দুই বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও একলাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
মামলার অপর পলাতক আসামি ইশতিয়াক সাদেককে তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৪০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রায় ঘোষণার সময় এমপি হারুন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
এরপর খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করেন হারুন অর রশীদ।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, হারুন বিএনপি জোট সরকারের সময় এমপি থাকাকালে ২০০৫ সালে ব্রিটেন থেকে একটি হ্যামার ব্র্যান্ডের গাড়ি শুল্কমুক্ত সুবিধায় কেনেন।
গাড়িটি তিনি পরে ইশতিয়াক সাদেকের কাছে ৯৮ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেন। এরপর সাদেক গাড়িটি চ্যানেল নাইনের এমডি বাপ্পীর কাছে বিক্রি করেন।
নিয়ম অনুযায়ী, শুল্কমুক্ত গাড়ি তিন বছরের মধ্যে বিক্রি করলে শুল্ক দিতে হয়। কিন্তু এমপি হারুন শুল্ক না দিয়ে বিশ্বাস ভঙ্গ করেছেন। এই অভিযোগে ২০০৭ সালের ৭ মার্চ এমপি হারুনসহ তিনজনের নামে এ মামলা দায়ের করেন তেজগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক ইউনুস আলী।
মামলায় ২০০৭ সালের ১৮ জুলাই তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়। একই বছর তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এ রায় দেন।
হারুন অর রশীদ গত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচিত হন।