ষড়যন্ত্র চলছে, বাতাসে চক্রান্তের গন্ধ : ওবায়দুল কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমাদের অস্তিত্বের জন্য ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার হাত শক্তিশালী করার বিকল্প নেই। আমরা যত ঐক্যবদ্ধ হবো, শেখ হাসিনার হাত তত শক্তিশালী হবে। এখনো ষড়যন্ত্র চলছে, বাতাসে চক্রান্তের গন্ধ আছে।
শনিবার (১৭ আগস্ট) বিকেলে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ বিরোধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশের ৬৩টি জেলায় সিরিজ বোমা হামলার প্রতিবাদে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
এসময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনি কি ভুলে গেছেন, কারা সেদিন রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চালিয়েছিল বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে? ২১ আগস্ট রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় গ্রেনেড হামলা চালিয়ে রক্তের গঙ্গা বইয়ে দেওয়া হয়েছিল। কারা ছিল এ ঘটনার মাস্টারমাইন্ড, ষড়যন্ত্রের নেপথ্যে? হাওয়া ভবন থেকে কীভাবে নির্দেশনা এসেছিল? সেদিন এফবিআই’কে তদন্ত করতে দেওয়া হয়নি, স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডকে আসতে দেওয়া হয়নি। আমাদের সব মনে আছে। ফখরুল সাহেব, আপনি কর্মীদের জন্য কাঁদেন। কিন্তু, আপনাদের সরকারের আমলে আমাদের কাঁদতে কাঁদতে চোখের পানি শুকিয়ে গিয়েছিল।
তিনি বলেন, এই বিএনপিই সেদিন হত্যা, ষড়যন্ত্র, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস সৃষ্টি করে রাজনীতিশুন্য করতে চেয়েছিল। ১৭ আগস্ট সারাদেশে সিরিজ বোমা হামলারও পৃষ্ঠপোষকতা করেছিল তারা। অনেক কিছু ভুলে গিয়েছিলাম। ১৫ আগস্ট, ২১ আগস্টের কথা ভুলে সেদিন সন্তানহারা মাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বান্তনা জানাতে গিয়েছিলেন। কিন্তু, আপনারা ঘরের দরজা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। গণভবনে প্রধানমন্ত্রী আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। কিন্তু, কী ভাষায় কথা বলা হয়েছিল? এসবের জবাব দিতে পারবেন না, ফখরুল সাহেব। ভুলের রাজনীতি, নেতিবাচক রাজনীতি, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষকতা করে আপনারা নিজেদের রাজনীতি নিজেরাই শুন্য করে দিয়েছেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, ফখরুল সাহেব বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন করতে পারছেন না। আপনারা কত দেউলিয়া হয়ে গেছেন যে, আন্দোলন করতে পারেননি। আপনাদের দেখলে মনে হয়, জয়নুল আবেদীনের ছবির কাঁদার মধ্যে আটকে যাওয়া গরুর গাড়ির মতো। এখান থেতে উদ্ধার পেতে হলে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসের পৃষ্ঠপোষকতা, দুর্নীতির রাজনীতি পরিহার করতে হবে। নেতিবাচক ধ্বংসাত্মক রাজনীতি করতে করতে আপনারা ভুলের চোরাবালিতে এসে নিজেদের শুন্য করে দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ আপনাদের শূন্য করতে চায়নি।
তিনি বলেন, খুনের রাজনীতি, হত্যার রাজনীতি, সন্ত্রাসের রাজনীতি জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষকতার রাজনীতি আপনারাই শুরু করেছিলেন। আজ কোন সাহসে সন্ত্রাসের রাজনীতির কথা বলেন। বাংলাদেশের মানুষ কি ভুলে গেছে, সেই হাওয়া ভবনের লুটপাট, দুর্নীতিতে পাঁচবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কথা? আজ বলেন দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট। এ সিন্ডিকেটের পৃষ্ঠপোষক আপনারা।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচন আবার আসছে। কয়েক মাস পর ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচন। জোর করে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে শেখ হাসিনা নির্বাচনে জিততে চান না। আমরা জনগণকে খুশি করে রায় মেনে নির্বাচিত হতে চাই। জনপ্রতিনিধি যারা আছেন, আপনারা কেউ যদি ভাবেন, ক্ষমতায় আছি, জিতেই যাবো, তাহলে ভুল করবেন। আপনাকে জনগণের মন জয় করে, জনগণের ভোটেই নির্বাচিত হতে হবে। সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আমাদের বিজয়ী হতে হবে।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, একেএম এনামুল হক শামীম, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, দফতর সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাম, কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন, ঢাকা মহানগর নেতা শেখ বজলুর রহমান, শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ।