মৌলভীবাজার মুক্ত দিবস আজ

আজ ৮ ডিসেম্বর; মৌলভীবাজার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে মৌলভীবাজারের শেরপুর ও শমসেরনগরে সম্মুখ যুদ্ধসহ মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর যৌথ আক্রমণের মুখে পাকবাহিনী মৌলভীবাজার থেকে পিছু হটে। ৭৮ জন মুক্তিযোদ্ধা ও অসংখ্য মুক্তিকামী মানুষের প্রাণের বিনিময়ে মৌলভীবাজার পাকিস্তানি সেনা মুক্ত হয়।
জানা যায়, মৌলভীবাজার শহরে প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইন্সটিটিউট ছিল পাক বাহিনীর এই অঞ্চলের ব্রিগেড হেড কোয়ার্টার। যুদ্ধকালীন হানাদার বাহিনীর টর্চার শেল হিসেবে পরিচিত বাংকারটি পিটিআইতে মাটি চাপা অবস্থায় আজো সাক্ষী হয়ে আছে।
কমলগঞ্জ, রাজনগর, শ্রীমঙ্গল, কুলাউড়া, বড়লেখা ও জুড়ি উপজেলাকে হানাদারমুক্ত ঘোষণার পর ৫ ডিসেম্বর রাতে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী তিনদিক থেকে আক্রমণের জন্য মৌলভীবাজার শহরের দিকে অগ্রসর হয়।
৬ ডিসেম্বর বর্ষিজোড়া, সালামীটিলা, এবং শমসেরনগর সড়ক এলাকায় মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর সঙ্গে পাকসেনাদের ব্যাপক যুদ্ধ হয়। যুদ্ধের এক পর্যায়ে হানাদার বাহিনী পর্যুদস্ত হয়ে ৭ ডিসেম্বর সিলেটের দিকে পালিয়ে যায়। মুক্তিযোদ্ধাদের দখলে আসে মৌলভীবাজার। এরপর তখনকার গণপরিষদের সদস্য বর্তমানে মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমানের নেতৃত্বে ৮ ডিসেম্বর তৎকালীন মহকুমা হাকিমের কার্যালয় (বর্তমান জর্জ কোর্ট ভবনে) মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয় জনসাধারণকে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়।
জেলা পরিষদের মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমান জানান, সে দিন ছিল আমাদের কাছে আনন্দের এবং কষ্টের দিন। অনেক সহযোদ্ধাকে আমাদের হারাতে হয়েছিল সে সাথে মৌলভীবাজার মুক্ত হয়েছিল।
তিনি আরও জানান, জেলায় অনেক গণহত্যার গণকবর ও বধ্যভূমি রয়েছে যা এখনো সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা হয়নি। সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে জেলার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণ করার স্বার্থে বধ্যভূমি, গণহত্যার স্থানগুলো সংরক্ষণ করে শহীদদের নাম-স্মৃতিফলক করা প্রয়োজন।

আরও সংবাদ